কলকাতার খাবার ও ১০টি দর্শনীয় স্থান

  • আপনি যদি ইতিমধ্যে গুগল দিয়ে কুহুডাকে লগইন বা রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন, তবে কমিউনিটিতে একই ইমেইল বা ইউজারনেম অথবা গুগল দিয়ে সরাসরি লগইন করতে সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন। বিস্তারিত দেখুন…

কলকাতার খাবার ও ১০টি দর্শনীয় স্থান। কলকাতা (Kolkata) ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সংমিশ্রণ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতা, একটি প্রাণবন্ত ও ঐতিহ্যবাহী শহর। একসময় এটি ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ছিল এবং আজও এটি সংস্কৃতি, ইতিহাস ও খাবারের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। কলকাতা শহরটি একদিকে যেমন ব্রিটিশ স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করে, অন্যদিকে এটি আধুনিকতার ছোঁয়াও পেয়েছে।

কলকাতার খাবার ও ১০টি দর্শনীয় স্থান


আরও: সিলেট বিভাগের সেরা ১০টি দর্শনীয় স্থান

কলকাতার দর্শনীয় স্থানসমূহ​


১. ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল​

ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্থান। এটি ব্রিটিশ স্থাপত্যের এক অপূর্ব নিদর্শন, যা ১৯০৬-১৯২১ সালের মধ্যে নির্মিত হয়েছিল। সাদা মার্বেলের তৈরি এই স্মৃতিসৌধে রয়েছে একটি জাদুঘর, যেখানে ব্রিটিশ আমলের নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন সংরক্ষিত রয়েছে। এটি ঘিরে থাকা বাগানও ভ্রমণকারীদের জন্য অন্যতম আকর্ষণ।

২. হাওড়া ব্রিজ​

হাওড়া ব্রিজ কলকাতার প্রতীকী স্থাপত্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। গঙ্গা নদীর ওপর নির্মিত এই ব্রিজটি কোনো খুঁটির সাহায্য ছাড়াই দাঁড়িয়ে আছে, যা এক প্রকৌশলগত বিস্ময়। প্রতিদিন লাখো মানুষ ও যানবাহন এই ব্রিজ ব্যবহার করে। সন্ধ্যায় আলোয় সাজানো এই ব্রিজের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়।

৩. দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির​

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত একটি বিখ্যাত হিন্দু তীর্থস্থান। রাণী রাসমণি ১৮৫৫ সালে এই মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে স্বামী বিবেকানন্দের গুরু শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস দেব সাধনা করেছিলেন। মন্দিরের আশপাশের দৃশ্য ও নির্মাণশৈলী দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।

৪. বেলুড় মঠ​

বেলুড় মঠ রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান কেন্দ্র। এটি স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিষ্ঠা করেন এবং এটি হিন্দু, ইসলাম ও খ্রিস্টান স্থাপত্যশৈলীর সংমিশ্রণে নির্মিত। মঠের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, গঙ্গার তীর এবং স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিচিহ্ন এটি দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণীয় করে তোলে।

৫. ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম​

১৮১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম ভারতের প্রাচীনতম এবং বৃহত্তম জাদুঘর। এখানে মমি, অ্যান্টিক মুদ্রা, প্রাগৈতিহাসিক জীবাশ্ম, পেইন্টিং ও নানা ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য এটি এক দারুণ গন্তব্য।

আরও: কুয়াকাটা দেখার মতো কি কি আছে

৬. পার্ক স্ট্রিট​

পার্ক স্ট্রিট হলো কলকাতার নাইটলাইফের প্রাণকেন্দ্র। এটি তার রেস্তোরাঁ, ক্যাফে ও বারগুলোর জন্য বিখ্যাত। বিশেষ করে বড়দিন ও নতুন বছরের সময় পার্ক স্ট্রিট আলোয় সজ্জিত হয় এবং হাজারো পর্যটকের ভিড় জমে।

৭. সায়েন্স সিটি​

সায়েন্স সিটি কলকাতার সবচেয়ে বড় বিজ্ঞান কেন্দ্র। এখানে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রদর্শনী, থ্রিডি থিয়েটার, ডিজিটাল এক্সপেরিমেন্ট এবং স্পেস থিয়েটার রয়েছে, যা শিশু ও বড়দের জন্য দারুণ আকর্ষণীয়।

৮. মার্বেল প্যালেস​

১৮৩৫ সালে তৈরি মার্বেল প্যালেস একটি ব্যক্তিগত ম্যানশন, যেখানে ইউরোপীয় শিল্পকর্ম, বিরল চিত্রকলা এবং অ্যান্টিক সংগ্রহ রয়েছে। এটি শোভাবাজার অঞ্চলে অবস্থিত এবং বিশেষ অনুমতি নিয়ে এখানে প্রবেশ করা যায়।

৯. মাদার টেরেসার মিশনারিজ অফ চ্যারিটি​

বিশ্ববিখ্যাত সমাজসেবী মাদার টেরেসার প্রতিষ্ঠিত এই মিশন দরিদ্র ও অসহায় মানুষের জন্য কাজ করে। এখানে মাদার টেরেসার সমাধিস্থল রয়েছে এবং তার ব্যবহৃত নানা জিনিস সংরক্ষিত আছে।

১০. নিকো পার্ক​

যারা একটু মজার বিনোদন চান, তাদের জন্য নিকো পার্ক আদর্শ জায়গা। এটি কলকাতার সবচেয়ে বড় অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, যেখানে বিভিন্ন রাইড, ওয়াটার পার্ক এবং থিম পার্কের ব্যবস্থা রয়েছে।


কিভাবে যাবেন​

বাংলাদেশ থেকে কলকাতা যাওয়ার প্রধান উপায় হলো ট্রেন, বাস ও বিমান।
  • বিমান: ঢাকা থেকে কলকাতা পর্যন্ত বিভিন্ন এয়ারলাইনসের সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। মাত্র ১ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতায় পৌঁছানো যায়।
  • ট্রেন: মৈত্রী এক্সপ্রেস ও বন্ধন এক্সপ্রেস বাংলাদেশের সাথে কলকাতার সরাসরি রেল যোগাযোগ নিশ্চিত করে। এটি সাশ্রয়ী ও আরামদায়ক উপায়।
  • বাস: ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা থেকে এসি ও নন-এসি বাস কলকাতার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পেট্রাপোল বর্ডার পেরিয়ে সহজেই কলকাতা পৌঁছানো যায়।

কোথায় থাকবেন​

কলকাতায় বিভিন্ন বাজেট অনুযায়ী থাকার জায়গা পাওয়া যায়। কিছু জনপ্রিয় অপশন:
  • বাজেট হোটেল: সুদারশন হোটেল, হোটেল মার্বেল প্লেস
  • মিড-রেঞ্জ হোটেল: দ্য পিয়ারলেস ইন, দ্য লিন্ডসে
  • প্রিমিয়াম হোটেল: ওবেরয় গ্র্যান্ড, তাজ বেঙ্গল

কলকাতার বিখ্যাত খাবার​


কলকাতার খাবার মানেই বাঙালি ঐতিহ্য ও স্বাদে ভরপুর এক অভিজ্ঞতা। এই শহরটি মিষ্টি, স্ট্রিট ফুড, এবং ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের জন্য বিখ্যাত। এখানে আপনি রাজকীয় থালি থেকে শুরু করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ফুচকা খাওয়া পর্যন্ত সবকিছুই উপভোগ করতে পারবেন।

১. রসগোল্লা​

কলকাতার রসগোল্লা বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। ছানা দিয়ে তৈরি নরম ও রসালো এই মিষ্টি কলকাতার প্রতিটি মিষ্টির দোকানে সহজেই পাওয়া যায়।

২. মিষ্টি দই​

গাঢ়, ঘন ও মিষ্টি স্বাদের দই কলকাতার খাবারের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। বিশেষ করে উৎসব বা অতিথি আপ্যায়নে এটি অপরিহার্য।

৩. ফুচকা​

বাংলাদেশের পানিপুরির মতো হলেও কলকাতার ফুচকা একটু ভিন্ন। টক-মিষ্টি তেঁতুল জল, ঝাল মশলা ও মচমচে পুরির সংমিশ্রণে তৈরি ফুচকা কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড।

৪. কষা মাংস ও লুচি​

গাঢ় মশলাদার মাটন বা চিকেন কষা মাংসের সঙ্গে গরম গরম লুচির কম্বিনেশন যে কোনো বাঙালির স্বপ্নের খাবার। কলকাতার বিভিন্ন খাবারের দোকানে এই ঐতিহ্যবাহী পদ পাওয়া যায়।

৫. কाঠী রোল​

স্ট্রিট ফুডের রাজা বলা হয় কলকাতার কাটি রোলকে। পরোটার মধ্যে ডিম, মাংস, বা সবজি ভরে নানা রকম চাটনি ও মশলা দিয়ে পরিবেশন করা হয়, যা চেখে দেখার মতো।

৬. টেলি ভাজা​

সন্ধ্যার নাস্তায় চায়ের সঙ্গে কলকাতার বিখ্যাত টেলি ভাজাগুলো যেন আবশ্যক! সিঙ্গারা, বেগুনি, আলুর চপ, মাছের চপসহ নানা ধরনের ভাজাপোড়া পাওয়া যায় শহরের অলিগলির দোকানে।

৭. চাইনিজ খাবার (টাঙ্গরা চাইনিজ)​

কলকাতার টাঙ্গরা এলাকা ভারতের অন্যতম বিখ্যাত চাইনিজ খাবারের কেন্দ্র। এখানে আপনি খাঁটি হাক্কা নুডলস, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান, সিজলিং রাইস ইত্যাদি উপভোগ করতে পারেন।

৮. মুগলাই পরোটা​

কলকাতার মুগলাই পরোটা মজাদার একটি খাবার, যা ডিম, মাংস, ও নানা মশলা দিয়ে তৈরি হয়। এটি সাধারণত আলুর দম বা গাঢ় গ্রেভির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।

৯. চা​

কলকাতার চায়ের স্বাদই আলাদা! বিশেষ করে মাটির ভাঁড়ে পরিবেশিত দুধ চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা একেবারেই আলাদা, যা শহরের অলিগলিতে পাওয়া যায়।

১০. মছের ঝোল-ভাত​

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবারের তালিকায় মাছের ঝোল-ভাত অন্যতম। ইলিশ, রুই, পাবদা, বাটা ইত্যাদি মাছের ঝোল মশলাদার ও সুস্বাদু হয়ে থাকে।

কলকাতা শুধুমাত্র একটি শহর নয়, এটি একটি অনুভূতি। এর প্রতিটি গলি, খাবার, স্থাপত্য ও মানুষের হাসিমুখ এক অনন্য অভিজ্ঞতা দেয়। আপনি যদি সংস্কৃতি, ইতিহাস ও খাবারের স্বাদ নিতে চান, তাহলে কলকাতা আপনার জন্য একটি আদর্শ গন্তব্য। আপনার পরবর্তী কলকাতা ভ্রমণ শুভ হোক!

ফেসবুক: কুহুডাক
 

কমিউনিটি ফিড

কক্সবাজারের সেরা ৫ হোটেল
আপনার সুন্দর ভ্রমণ কাহিনী আছে?
প্রকৃতি দেখুন এবং আল্লাহর সৃষ্টির সৌন্দর্য উপভোগ করুন।
কুহুডাক ভ্রমণ কমিউনিটির রিওয়ার্ড বেসড গিফট উদ্যোগ। আপনি যুক্ত হচ্ছেন কখন?
পৃথিবী দেখো, মন খুলে। ভ্রমণ জীবনের সেরা শিক্ষক।

বাংলাদেশের সেরা ভ্রমণ স্থান কোনটি?

  • কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

    ভোট: 3 100.0%
  • সুন্দরবন

    ভোট: 0 0.0%
  • সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

    ভোট: 0 0.0%
  • সাজেক ভ্যালি

    ভোট: 0 0.0%
  • পানাম নগর

    ভোট: 0 0.0%
  • জাফলং

    ভোট: 0 0.0%