ভ্রমণে খাবার স্যালাইন রাখার প্রয়োজনীয়তা এবং কেন রাখবেন? ভ্রমণ আমাদের জীবনের অন্যতম আনন্দদায়ক এবং রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হতে পারে। তবে ভ্রমণের সময় শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ ভ্রমণ, গরমের প্রকোপ, অনিয়মিত খাবার গ্রহণ, ক্লান্তি এবং পানিশূন্যতার কারণে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ট্রেকিং, পাহাড়ি পথ বা সমুদ্র সৈকতে সময় কাটানোর সময় আমাদের শরীরের লবণ ও পানির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে।
এই সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে খাবার স্যালাইন। এটি শরীরে দ্রুত পানির অভাব পূরণ করে, শক্তি বাড়ায়, ক্লান্তি দূর করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই একজন সচেতন ট্রাভেলারের ব্যাগে খাবার স্যালাইন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন এবার এক এক করে খাবার স্যালাইনের প্রয়োজনীয়তা ও আমাদের করণীও সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।
আরও: কোন ভ্রমণে কি ধরনের মোজা পরবেন
আরও: ভ্রমণে কখন কোন ক্যাপ পরবেন
ফেসবুক: কুহুডাক
এই সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে খাবার স্যালাইন। এটি শরীরে দ্রুত পানির অভাব পূরণ করে, শক্তি বাড়ায়, ক্লান্তি দূর করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তাই একজন সচেতন ট্রাভেলারের ব্যাগে খাবার স্যালাইন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চলুন এবার এক এক করে খাবার স্যালাইনের প্রয়োজনীয়তা ও আমাদের করণীও সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।
আরও: কোন ভ্রমণে কি ধরনের মোজা পরবেন
ভ্রমণ এবং শরীরের পানিশূন্যতা
ভ্রমণের সময় দীর্ঘ হাঁটা, পরিশ্রম, গরম আবহাওয়া এবং পর্যাপ্ত পানি না পান করার ফলে আমাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। পানিশূন্যতার কিছু লক্ষণ হলো:- মাথা ঘোরা
- অতিরিক্ত ক্লান্তি
- বমি বমি ভাব
- অতিরিক্ত তৃষ্ণা
- প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাওয়া
- শরীর দুর্বল লাগা
খাবার স্যালাইন কি এবং এর কার্যকারিতা
খাবার স্যালাইন মূলত পানি, লবণ এবং গ্লুকোজের মিশ্রণ। এটি আমাদের শরীরে দ্রুত পানির অভাব পূরণ করে এবং ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখে। এটি সাধারণত দুই ধরনের হয়:- ওআরএস (Oral Rehydration Solution): এটি বিশেষভাবে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা প্রতিরোধের জন্য তৈরি করা হয়।
- ঘরোয়া খাবার স্যালাইন: সহজে ঘরে তৈরি করা যায়, যেখানে লবণ ও চিনি নির্দিষ্ট পরিমাণে পানিতে মিশিয়ে তৈরি করা হয়।
কেন খাবার স্যালাইন সঙ্গে রাখা জরুরি?
১. পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে
ভ্রমণের সময় অতিরিক্ত ঘাম হলে শরীর থেকে লবণ ও পানি বেরিয়ে যায়। এই অভাব পূরণ না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। খাবার স্যালাইন শরীরের তরল পুনরুদ্ধার করে এবং পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করে।২. শক্তি পুনরুদ্ধার করে
গ্লুকোজ সমৃদ্ধ স্যালাইন শরীরের জন্য তাৎক্ষণিক শক্তির উৎস। এটি শরীরে দ্রুত শোষিত হয়ে শক্তি বাড়ায় এবং ক্লান্তি দূর করে।৩. বমি ও ডায়েরিয়ার সমস্যা কমায়
ভ্রমণের সময় অনেকেই অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কারণে পেটের সমস্যায় ভোগেন। বিশেষ করে খাবারের বিষক্রিয়া, ডায়েরিয়া বা বমির ফলে শরীরে পানি ও লবণের অভাব দেখা দেয়। খাবার স্যালাইন এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে পারে।৪. মোশন সিকনেস কমায়
অনেকেই বাস, ট্রেন বা নৌকায় চলার সময় মোশন সিকনেসে ভোগেন। এতে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বমি ভাব হয়। খাবার স্যালাইন খেলে শরীরে লবণের ভারসাম্য বজায় থাকে, যা মোশন সিকনেস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।৫. গরমের ধকল কমায়
গ্রীষ্মকালে দীর্ঘ সময় রোদে থাকার ফলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়, যা হিট স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। স্যালাইন শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে এবং হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করে।৬. উচ্চতাতে অক্সিজেনের অভাব মোকাবিলা করতে সাহায্য করে
যারা পাহাড় বা উঁচু জায়গায় ভ্রমণ করেন, তারা প্রায়ই উচ্চতার কারণে ক্লান্তি ও শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন। খাবার স্যালাইন শরীরে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রোলাইটের ভারসাম্য বজায় রেখে অক্সিজেন গ্রহণ প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।আরও: ভ্রমণে কখন কোন ক্যাপ পরবেন
কখন খাবার স্যালাইন খাওয়া বা পান করা উচিত?
- অতিরিক্ত গরমে বা দীর্ঘ ভ্রমণের সময়।
- অতিরিক্ত ঘামের কারণে দুর্বলতা অনুভব করলে।
- ডায়েরিয়া বা বমির সমস্যা হলে।
- লম্বা ট্রেকিং বা পরিশ্রমের পর।
- শরীরে পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে।
কীভাবে খাবার স্যালাইন তৈরি করবেন?
যদি রেডি-মেড খাবার স্যালাইন সঙ্গে না থাকে, তবে ঘরে তৈরি করা যায়। সহজ পদ্ধতি:- ১ লিটার বিশুদ্ধ পানিতে ১ চা চামচ লবণ ও ৬ চা চামচ চিনি মিশিয়ে নিন।
- ভালোভাবে নাড়ুন যাতে সব উপকরণ মিশে যায়।
- এটি ধীরে ধীরে পান করুন।
বাজারে সহজলভ্য খাবার স্যালাইন
যারা রেডি-মেড স্যালাইন নিতে চান, তারা নিম্নলিখিত ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে থেকে কিনতে পারেন:- ওআরএস
- পেডিয়ালাইট
- রিহাইড্রেট
- গ্লুকোজ পাউডার
ভ্রমণে স্যালাইন সঙ্গে রাখার উপায়
- ছোট প্যাকেট বা পাউচ কিনে ব্যাগে রেখে দিন।
- প্লাস্টিকের বোতলে পানি ভরে তাতে স্যালাইন মিশিয়ে নিতে পারেন।
- ক্যাম্পিং বা ট্রেকিংয়ে যাওয়ার সময় বেশি পরিমাণে নিয়ে যান।
ভ্রমণকারীদের জন্য বিশেষ পরামর্শ
- দীর্ঘ ভ্রমণের সময় প্রতি ঘণ্টায় ২০০-২৫০ মিলিলিটার স্যালাইন পান করা ভালো।
- ডায়াবেটিস রোগীরা স্যালাইন গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
- শিশু ও বয়স্করা ভ্রমণের সময় পর্যাপ্ত স্যালাইন পান করছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
- যদি কোনো পর্যটন এলাকায় ডিহাইড্রেশন বেশি দেখা দেয়, তাহলে স্থানীয়দের জন্যও কিছু অতিরিক্ত স্যালাইন সঙ্গে রাখুন।
ফেসবুক: কুহুডাক