তিস্তা ব্যারেজ (Teesta Barrage) বা তিস্তা সেচ প্রকল্প রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানি ও নীলফামারী জেলার ডিমলাতে অবস্থিত। তিস্তা নদীর উপর নির্মিত এই সেচ প্রকল্পটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম সেচ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত।
আজকের পোস্টে আমরা তিস্তা ব্যারেজ বা তিস্তা সেচ প্রকল্প সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
আরও: ভিন্নজগত পার্ক
তিস্তা সেচ প্রকল্প
ভ্রমণ স্থান | তিস্তা ব্যারেজ |
ধরন | সেচ প্রকল্প |
অবস্থান | দোয়ানি, হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট ও ডিমলা, নীলফামারী |
দৈর্ঘ্য | ৬১৫ মিটার |
নির্মাণ কাজ শুরু | ১৯৭৯ সাল |
নির্মাণ কাজ শেষ | ১৯৯০ সাল |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | ৩৫৮ কিলোমিটার (প্রায়) |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
তিস্তা সেচ প্রকল্প নীলফামারী, রংপুর ও দিনাজপুর জেলার ৫ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান করে থাকে। এই প্রকল্পটি পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে রয়েছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ইতিহাস
উত্তরাঞ্চলে প্রচন্ড খরার কারনে ফসল উৎপাদনে ব্যাহত হয়ে থাকে। তাই, ব্রিটিশ আমলে ১৯৩৭ সালে প্রথম তিস্তা ব্যারেজ নিমার্ণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিলতার কারণে নির্মাণ কাজের পরিকল্পনা থাকলেও তা করা সম্ভব হয়নি।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রায় ২,৫০০কোটি টাকা ব্যয়ে তিস্তা ব্যারেজসহ সেচ যোগ্য কৃষিজমি ও জলকাঠামো নির্মাণের লক্ষ্যে ১৯৭৯ সালে ব্যারেজ নির্মাণের কাজ শুরু হয় এবং নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯০ সালে।
কি আছে তিস্তা ব্যারেজে
রংপুর বিভাগের লালমনিরহাট জেলার অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে তিস্তা ব্যারেজ। তিস্তা ব্যারেজের নদীর দুই পাশে গড়ে উঠেছে সবুজ বেষ্টনি। এছাড়াও ব্যারেজ এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পট।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর তিস্তার ব্যারেজের উজানে বাঁধ দিয়ে ঘেরা কৃত্রিম জলরাশি, সেচ বাইপাস খাল, বনায়ন আর পাথর দিয়ে বাধাঁনো পাড় সব মিলে এক মনোরম পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আপনি যদি অতিথি পাখি দেখতে চান তাহলে শীতকালে তিস্তা সেচ প্রকল্পে চলে যেতে পারে। কারন এখানে শীতকালে প্রচুর অতিথি পাখির আগমন ঘটে থাকে।
কিভাবে যাবেন
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে তিস্তা ভ্রমণে যেতে পারেন। তার জন্য প্রথমে আপনাকে নীলফামারী অথবা লালমনিরহাট জেলায় আসতে হবে।
বাস ভ্রমণ
ঢাকার গাবতলী এবং কল্যাণপুর থেকে নাবিল পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, মানিক এক্সপ্রেস, বরকত ট্রাভেলস, হানিফ, শাহ্ আলি পরিবহনের এসি অথবা নন-এসি বাসে করে লালমনিরহাট যেতে পারবেন।
ভাড়া: বাস ভাড়া ৬৫০ টাকা থেকে ২০০০ টাকা নিতে পারে।
ট্রেন ভ্রমণ
ট্রেনে যেতে চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে যেতে পারেন। ট্রেন প্রতি শুক্রবার ছাড়া বাকি ৬ দিন রাত ০৯:৪৫ মিনিটে লালমনি এক্সপ্রেস যাত্রা করে থাকে।
ভাড়া: আসনভেদে ট্রেন ভাড়া ৫৫০ টাকা থেকে ১৯০০ টাকা হতে পারে।
রংপুর জেলা শহর থেকে প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরের এই প্রকল্পে যেতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মত। আপনি নীলফামারী থেকে তিস্তা পাড়ে যাওয়ার জন্য রিক্সা, স্কুটার এবং মোটরসাইকেল ভাড়া করে যেতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
তিস্তা ব্যারেজে ভ্রমণে গিয়ে খাওয়ার জন্য আশেপাশে বেশ কয়েকটি রাহমানিয়া হোটেল এন্ড ফুড কর্ণার, মুহাম্মাদিয়া হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট, বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেঁস্তোরা, টাঙ্গাইল মিস্টি ঘর, মাতৃ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ইত্যাদি হোটেল বা রেস্টুরেন্ট পাবেন।
লালমনিরহাট জেলা কিন্তু রসের জন্য বিখ্যাত। বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা।
কোথায় থাকবেন
তিস্তা ব্যারেজে ভ্রমণ শেষে থাকার জন্য নীলফামারি অথবা লালমনিরহাট জেলা শহরে চলে যেতে পারেন। শহরে ছোট বড় থাকার হোটেল পাবেন। এছাড়া ব্যারেজের পাশে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত অবসর রেস্ট হাউজ। চাইলে এখানেও থাকতে পারেন তবে, রেস্ট হাউজ সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়।
ফেসবুক: Kuhudak