টাকা জাদুঘর – মিরপুর, ঢাকা ভ্রমণ করে আসলাম। ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির ২য় তলায় স্থাপিত হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা জাদুঘর।
টাকা জাদুঘরে রয়েছে ব্রিটিশ শাসন আমলের পূর্ব থেকে এই ভারতবর্ষে চালু হওয়া আর্থিক লেনদেনের বিভিন্ন মুদ্রা যেমন: কড়ি, ফুটো পয়সা, কাগুজে নোট থেকে শুরু করে বর্তমানে প্রচলিত টাকা পয়সা। এছাড়া বিশ্বের প্রায় ১২০টি দেশের কাগজের নোট, পলিমার, হাইব্রিড নোট ও ধাতব মুদ্রা রয়েছে।
আপনি টাকা জাদুঘরে টাকা ছাড়াও পুরনো দিনের আরও অনেক কিছুই দেখতে পাবেন। সেজন্য আপনাকে আসতে ঢাকার এই টাকা জাদুঘরে।
আজকের ভ্রমণে আমি আরিফ হোসেন (GoArif) আপনার সাথে মিরপুর এর এই টাকা জাদুঘর সম্পর্কে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করব এবং আপনাকে এই মুদ্রা জাদুঘরটি ঘুরে দেখাব।
চলুন শুরু করা যাক…
আরও: চিড়িয়াখানা
টাকা জাদুঘর
ভ্রমণ স্থান | টাকা জাদুঘর (Taka Museum) |
ধরন | মুদ্রা জাদুঘর |
অবস্থান | মিরপুর-২, ঢাকা, বাংলাদেশ |
স্থাপিত | ২৭ এপ্রিল, ২০১৩ |
প্রতিষ্ঠা দিবস | ৫ অক্টোবর, ২০১৩ |
মালিক | বাংলাদেশ ব্যাংক |
টিকিট মূল্য | সম্পূর্ণ ফ্রি |
ঢাকা থেকে টাকা জাদুঘর দূরত্ব | ১১ কিলোমিটার (প্রায়) |
টাকা জাদুঘর খোলা থাকার সময়
শনিবার | সকাল ১১ থেকে বিকাল ৫টা |
রবিবার | সকাল ১১ থেকে বিকাল ৫টা |
সোমবার | সকাল ১১ থেকে বিকাল ৫টা |
মঙ্গলবার | সকাল ১১ থেকে বিকাল ৫টা |
বুধবার | সকাল ১১ থেকে বিকাল ৫টা |
বৃহস্পতিবার | বন্ধ |
শুক্রবার | বিকাল ৪ থেকে সন্ধ্যা ৭টা |
নোট: বৃহস্পতিবার ও সরকারি ছুটির দিনে জাদুঘর বন্ধ থাকে।
টাকার জাদুঘর কোথায়
বাংলাদেশের এই একমাত্র মুদ্রা বা টাকা জাদুঘরটি ঢাকা মিরপুর-২ নাম্বার এর বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে। এটি মুদ্রা সম্পর্কিত একটি বিশেষায়িত জাদুঘর।
আপনি মিরপুর ২ নাম্বার থেকে বা শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম থেকে পশ্চিম দিকে বা মিরপুর ১ নাম্বারের দিকে কয়েক মিনিট হেটে গেলেই জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এর পাশেই জাদুঘরটি দেখতে পাবেন।
আরও: মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর ভ্রমণ, বগুড়া
ইতিহাস
জাদুঘর এর ইতিহাস নিয়ে তেমন কিছু বলার নেই তবে, এই জাদুঘরে যে মুদ্রা বা অন্যান্য পুরনো জিনিসপত্র রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে অনেক ইতিহাস রয়েছে।
আবহমানকাল থেকে প্রাচীন বাংলা তথা উপমহাদেশে মুদ্রার ক্রমবিকাশের ধারাকে লালন, সংরক্ষণ, তার নান্দনিক উপস্থাপন ও বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুদ্রার ইতিহাস সাধারণে তুলে ধরা টাকা জাদুঘর প্রতিষ্ঠার মুখ্য উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের মূল ভবনে ২০১৯ সালে স্থাপিত কারেন্সি মিউজিয়ামের সম্প্রসারিত এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ রূপ হলো টাকা জাদুঘর।
এখানে সংরক্ষিত এবং প্রদর্শিত হচ্ছে প্রাচীন আমল থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত মুদ্রিত বিভিন্ন ধরনের ধাতব মুদ্রা, কাগুজে নোট ও মুদ্রা সম্পর্কিত দ্রব্যসামগ্রী।
আরও: জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান
টাকা জাদুঘর ভ্রমণ কাহিনী
প্রায় দুপুরের দিকে আমরা জাদুঘরের মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করলাম। মূল ফটকেই বড় করে লেখা রয়েছে “টাকা জাদুঘর”। এখানে বেশ কিছু প্রাচীন মুদ্রা খোদাই করে একটার সাথে আরেকটা লাগিয়ে দেয়া রয়েছে। তবে এগুলো আসল মুদ্রা নয়।
নিচে রয়েছে টাকার গাছ! আমরা লোক মুখে সব সময় টাকার গাছের কথা শুনলেও এখানে আসলে আপনি সত্যি সত্যি টাকার গাছ দেখতে পাবেন!!
আমরা সামনে এগিয়ে গেলাম। ভিতরে প্রবেশের জন্য সিঁড়ির দিকে তাকাতেই চোখ পড়ল দেয়ালে খোলাই করা “পোড়া মাটির ফলক চিত্র”। শিল্পী: হাশেম খান, শ্যামল চৌধুরী, মাহমুদুল হাসান এবং মুকুল মুৎসুদ্দী এর আঁকা চমৎকার পোড়ামাটির ফলক।
পোড়ামাটির ফলকে শিল্পীরা প্রাচীন বাংলার মুদ্রা আদান-প্রদানের এক চিত্র তুলে ধরেছেন। সাথে কিছু প্রাচীন মুদ্রা রয়েছে।
সিঁড়ির প্রতিটি ধাপে নানা গাছ দিয়ে জায়গাটিকে সবুজের সমারোহ করে রাখা হয়েছে। আমার খুবই ভালো লাগছিল। আমরা সামনে এগোলাম।
নিচতলার ডান দিকে একজন কর্তব্যরত মহিলা বসেছিলেন। তিনি আমাদের সম্পর্কে জানতে চাইলেন (এই যেমন: আমাদের নাম, কোথায় থেকে এসেছি, মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি) এবং সেগুলো কম্পিউটারে এন্ট্রি করলেন।
এরপর আমরা সিঁড়ি বেয়ে ২য় তলায় চলে আসলাম।
আরও: জল্লাদখানা বধ্যভূমি
জাদুঘরে কি আছে
সম্পূর্ণ জাদুঘরটি ২টি গ্যালারিতে ভাগ করা। শুরুতেই গ্যালারি -১ দিয়ে প্রবেশ করলাম। মুদ্রা গুলো কাচের গ্লাস দিয়ে আটকানো। গ্লাসের ভিতরে এইডি লাইটের আলো জ্বলছে।
গ্যালারি -১
মুদ্রার পাশে মুদ্রা সম্পর্কে কিছু তথ্য দেয়া রয়েছে। মুদ্রার নাম, এটি কত থেকে কত সাল পর্যন্ত প্রচলিত ছিল ইত্যাদি আর কি।
সম্পূর্ণ গ্যালারিটি শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। মুদ্রা গুলো পরিপাটি করে চারদিকে সুন্দর করে সাজানো। সবাই হেটে হেটে দেখছে। কোন শব্দ নেই। তবে মাঝে মাঝে একজন আরেকজনের কানের কাছে মুখ নিয়ে কি যেন ফিস ফিস করে বলছে।
মানুষের হাঁটার শব্দ আর মাঝে মাঝে ফিস ফিসের শব্দ ছাড়া ভিতরে আর কোন শব্দ নেই।
এবার চলুন প্রাচীন এই মুদ্রা গুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য জানা যাক।
আরও: বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর
ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা
বাংলাদেশ তথা ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বপ্রাচীন মুদ্রা হচ্ছে এই ছাপাঙ্কিত পাঞ্চ মার্কড বা ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা। বাংলাদেশে এই পর্যন্ত দুই শ্রেণির ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়।
এই দুই শ্রেণির ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা একটি হচ্ছে আঞ্চলিক এবং অন্যটি রাজকীয় মৌর্য বংশের সিরিজ ভুক্ত মুদ্রা।
আকারের দিক থেকে এসব মুদ্রা ৪ শ্রেণির হয় যেমন:
- নিরেট পিগু (Ingot)
- বক্রদগু (Bent bar)
- সম বা অসম চতুষ্কোন (Square or Oblong)
- গোলাকার (Round)
ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রাগুলোর বিশেষত্ব হচ্ছে এগুলোতে বিভিন্ন ধরনের প্রতীকচিহ্ন বা ছাপ দেখা যায়। যেমন- সূর্য, পাহাড়, নদী, মাছ, নৌকা, গাছ, পাখি, হাতি প্রভৃতি। মুদ্রার সম্মুখ পৃষ্ঠের পাচটি প্রতিকযুক্ত ছাপ এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
বাংলাদেশের নরসিংদীর উয়ারী-বটেশ্বর ও বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের মাধ্যমে আঞ্চলিক এবং মৌর্য সময়কালীন ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা পাওয়া যায়।
প্রদর্শিত মুদ্রাগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের অর্থাৎ মৌর্য যুগের। এছাড়া প্রদর্শনীতে রয়েছে গান্ধার জনপদের বক্রদন্ড ও বৃত্তাকার ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা।
আরও: গোলাপ গ্রাম ভ্রমণ – সাদুল্লাপুর, বিরুলিয়া, সাভার
হরিকেল মুদ্রা
প্রাচীন বাংলার একটি জনপদের নাম হারিকেল। খ্রিস্টীয় ৭ম-৯ম শতক সময়কালে হারিকেল রাজ্যে রৌপ্য নির্মিত এই মুদ্রার প্রচলন ছিল। হারিকেল মুদ্রার বৈশিষ্ট্য হলো এই শ্রেণির মুদ্রার একদিকে হয়েছে ব্রাম্মী লিপিতে স্থানের বা রাজ্যের নাম “হারিকেল” এবং হিন্দু দেবতা শিবের বাহন নন্দী বা ষাড়।
আপরদিকে রয়েছে ত্রিশূল। রাজ্যের নামে মুদ্রার এরকম নামকরণ হয়েছে অনুমান করা যায়। যতদূর জানা যায় যে প্রাচীন জনপদ হারিকেল রাজ্যের বিস্তৃতি ছিল আধুনিক সিলেট, নোয়াখালি, কুমিল্লা- ময়নামতি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান থেকে খননের মাধ্যমে আবিষ্কৃত হয়েছে।
বিবরণ | ওজন/গ্রাম | পরিমাণ/এম.এম. |
---|---|---|
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.৪৯ | ২৮.৭৫ * ১.৭৪ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.৫৯ | ২৯.৯৩ * ১.৭৯ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.৬৭ | ৩০.৯২ * ১.৬৯ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.২২ | ৩০.১৫ * ১.৮৯ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৫.৬৫ | ২৯.৪৮ * ১.৬৮ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.৯৫ | ২৮.৯৯ * ২.২৫ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.৬৭ | ২৮.৪০ * ২.২২ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৭.০৪ | ২৮.২০ * ১.৮৭ |
হরিকেল রৌপ্য মুদ্রা | ৬.৭৪ | ২৯.৪৫ * ১.৯৫ |
প্রাচীন মুদ্রা কড়ি থেকে কাগুজে নোট বিস্তারিত
কুষান মুদ্রা, হারিকেল মুদ্রা, দিল্লী ও বাংলার সুলতানের মুদ্রা, মোগল ও ব্রিটিশ শাসকদের মুদ্রাসহ আধুনিককালের মুদ্রা সম্ভার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শুরু করা যাক।
স্মরণাতীতকাল থেকে ১৯ শতক পর্যন্ত বাংলার ছোট ছোট লেনদেনে মুদ্রা হিসেবে কড়ি ব্যবহৃত হয়েছে।
মৌর্য শাসনের সমাপ্তিকাল থেকে গুপ্ত অধিকারকাল এর মধ্যবর্তী খ্রিস্টাব্দ ১ম-২য় শতকে কুষান সম্রাটগন ভারতবর্ষে শাসন ক্ষমতায় ছিলেন। সে সময় তারা স্বর্ণমুদ্রাসহ রৌপ্য ও তাম্রমুদ্রার প্রচলন করেন।
এছাড়া গুপ্ত সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত ২য় (খ্রিস্টাব্দ ৪র্থ থেকে ৫ম শতক) এর স্বর্ণমুদ্রাসহ কিছু রৌপ্যমুদ্রা।
খ্রিস্টাব্দ ৭ম-৮ম শতকের দিকে হারিকেল মুদ্রার প্রচলন ছিল। তা আপনারা ইতিমধ্যে উপরে জেনে এসেছেন। মধ্যযুগে মুসলমানদের বাংলার আগমন ছিল এ অঞ্চলের মুদ্রা ভিত্তিক নগর বিকাশ ও ব্যবস্থাপনা তথা ধাতব মুদ্রাকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের পুনঃপ্রবর্তন।
১৪শ এবং ১৫শ শতকে বাংলার স্বাধীন সুলতানী শাসনামলে মোট ২৬ জন শাসক বাংলার বিভিন্ন টাঁকশাল থেকে মুদ্রা জারি করেন। এসব মুদ্রায় প্রাপ্ত তথ্য থেকে এ পর্যন্ত ৪০টি টাঁকশালের নাম পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, গজনীর সুলতান মাহমুদ প্রথম মুদ্রাকে টঙ্কা বা টাকা হিসেবে পরিচিতি প্রদান করেন। দিল্লীর সুলতান ইলতুতমিশ তার স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রার নাম দিয়েছিলেন ‘তানকাহ’ বা টাকা।
আরও: জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান – মিরপুর, বাংলাদেশ
ব্রিটিশ সাম্রাজ্য
১৫৭৬ সালে মোগলদের বাংলা অধিকারের পর বাংলার মোগল শাসকদের কেন্দ্রীয় মুদ্রা চালু হয়। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের মাধ্যমে ভারতবর্ষে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও কিছুকাল মোগল মুদ্রাগুলো বিভিন্ন রূপে প্রচলিত ছিল।
১৮৩৫ সালে ব্রিটিশ মুদ্রার অনুকরণে প্রথম সারা ভারতে ব্রিটিশ মুদ্রার প্রচলন ঘটে। ভারতবর্ষে প্রথম কাগুজে নোটের প্রচলনও ঘটে ব্রিটিশ যুগে।
টাকা জাদুঘরে আব্বাসীয় খলিফাদের স্বর্ণের দিনার, দিল্লীর সুলতান আলাউদ্দিন মুহাম্মদ খলজি, গিয়াসউদ্দিন তুগলক শাহ্, মুহম্মদ বিন তুগলক শাহ্, মোগল সম্রাট শাহজাহান, আওরঙ্গজেব, ফররুখশিয়ার, ব্রিটিশ শাসক কুইন ভিক্টোরিয়ার কিছু স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে।
এছাড়া আরও রয়েছে সুলতানী, মোগল, ব্রিটিশ ভারতীয় রৌপ্য ও তাম্রমুদ্রা এবং কাগুজে নোট। ব্রিটিশ পরবর্তী পাকিস্তান এবং স্বাধীন বাংলাদেশে প্রচলিত মুদ্রা ও কাগুজে নোটের বিবর্তনের ধারাবাহিক ইতিহাস।
মুদ্রার পাশাপাশি ১ নাম্বার গ্যালারিতে আপনি আবহমান বাংলার মানুষের জীবনযাত্রা নিয়ে বানানো কিছু শিল্প চিত্র দেখতে পাবেন।
আরও: পানাম নগর ভ্রমণ – সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ
গ্যালারি -২
এক নাম্বার গ্যালারি শেষে চলে আসবেন দুই নাম্বার গ্যালারিতে। এখানে আসার মাঝপথে দর্শনার্থীদের জন্য বিশুদ্ধ পানি ও বিশ্রাম নেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
গ্যালারি -২ তে আপনি বেশ কিছু আধুনিক ডিওরমা দেখতে পাবেন। প্রাচীন পণ্য বিনিময় প্রথাসহ বাংলার প্রাচীন থেকে আধুনিককাল পর্যন্ত অর্থনীতি বিবর্তনের ধারা রয়েছে এতে।
সময়ের প্রয়োজনে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে টাকা জাদুঘরে। এখানে রয়েছে ডিজিটাল সাইনেজ, ডিজিটাল কিয়স্ক, এলইডি টিভি, থ্রিডি টিভি, প্রজেক্টর এবং ফটো কিয়স্ক।
এখানে ফটো কিয়স্কের মাধ্যমে দর্শনার্থীগন নিজেদের আবক্ষ ছবি সম্বলিত স্যুভেনির নোট মুদ্রা করে জাদুঘর ভ্রমণের মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে পারবেন। এছাড়া টাকা জাদুঘরে রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য।
আরও মজার বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশে প্রথম অডিও গাইড প্রযুক্তির প্রয়োগ করা হয়েছে টাকা জাদুঘরে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে গাইডের সাহায্য ছাড়াই দর্শনার্থীরা টাকা যাদুঘর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে।
টাকা জাদুঘর স্যুভেনির শপ
ঢাকার এই টাকা জাদুঘরে রয়েছে স্যুভেনির শপ। বিভিন্ন সময়ে মুদ্রিত স্মারক মুদ্রা, স্মারক নোট, বিভিন্ন ধরনের স্যুভেনির দ্রব্য এবং টাকা জাদুঘর কর্তৃক প্রকাশিত প্রকাশনাসমূহ দর্শনার্থীদের জাদুঘরের স্যুভেনির শপ থেকে ক্রয় করতে পারবেন।
আরও: চিড়িয়াখানা ভ্রমণ – মিরপুর, ঢাকা
বিশ্বের সুন্দরতম নোট
আপনি জানেন কি বিশ্বের সুন্দরতম নোট কোনটি? বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরতম নোট হচ্ছে বাংলাদেশের “দুই টাকা”।
রাশিয়ার অনলাইন এন্টারটেইনমেন্ট আউটলেট কর্তৃক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দরতম নোট এই দুই টাকা।
আশাকরি আজকের পোস্টের মাধ্যমে টাকা জাদুঘর সম্পর্কে কিছুটা জেনেছেন। তবে আরও বিস্তারিত জানার জন্য অবশ্যই আপনাকে ঘুরে আসতে হবে এই জাদুঘর থেকে।
আনন্দদানের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের মুদ্রা সম্পর্কিত জ্ঞান সমৃদ্ধ করার মাধ্যমসমূহের অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছে টাকা জাদুঘর।
আরও: জল্লাদখানা বধ্যভূমি ভ্রমণ – মিরপুর, ঢাকা
ভ্রমণ গাইড
ঢাকা থেকে টাকা জাদুঘর এর দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার।
ঢাকা বা বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে প্রথমে মিরপুর ১ অথবা ১০ নাম্বার চলে আসুন। এখানে আসার জন্য অনেক বাস আসে। শিকড়, শিখড়, হিমাচল, বিহঙ্গ, আর্শিবাদ, আকিক, রবরব, বাহন ইত্যাদি। রুট অনুযায়ী আরও অনেক বাস সার্ভিস রয়েছে।
মিরপুর ১ থেকে হেটে, রিক্সায় করে বা বাসে করে চলে আসবেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (হার্ট ফাউন্ডেশন)। এখানেই রয়েছে টাকা জাদুঘর। আপনি টাকা জাদুঘর বললেও যে কেউ চিনিয়ে দিবে।
মিরপুর ১০ থেকেও একই উপায়ে চলে আসতে পারেন। টাকা জাদুঘরটি মিরপুর ১০ এবং মিরপুর ১ এর মাঝমাঝি মিরপুর ২ এর সাথেই রয়েছে। মিরপুর ২ নাম্বারে রয়েছে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
আরও: ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
ফেসবুক: Kuhudak
আমি নাজিম ঢাকা থেকে বলছি।আমার কাছে ১৮০০-১৯০০সালের কয়েন আছে। ভিক্টোরিয়া রানীর খোদাই করা ছবি রয়েছে ও খোদাই করা ব্রিটিশ রাজার ছবি ও আছে এবং সিংহ মার্কা খোদাই করা রয়েছে কয়েন গুলোতে।আমি এসব কয়েন জাতীয় জাদুঘরে বিক্রি করতে পারবো।
ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্যের বিষয়ে কোন সহযোগিতা করতে পারছি না বলে দুঃখিত। তবে, আপনি মিরপুরে অবস্থিত টাকা জাদুঘর কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।