তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ গিয়েছি বেশ অনেক দিন হল। আজ হঠাৎ করে তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এর কথা মনে পরল। গুগল ড্রাইভ টা ওপেন করে তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এর ছবি গুলো দেখছিলাম। ভাবলাম আপনাদের সাথেও শেয়ার করি। তাই, তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ নিয়ে লিখতে বসে গেলাম।
চলুন শুরু করা যাক…
আরও পড়ুন: জজ নগর পার্ক ও মিনি জো
তাজমহল সোনারগাঁও
দর্শনীয় স্থান | তাজমহল বাংলাদেশ |
স্থান | নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এর জামপুর ইউনিয়নের পেরাব গ্রাম |
আয়তন | তাজমহল ১৮ বিঘা জায়গার উপর নির্মিত |
রেপ্লিকা | ভারতের আগ্রায়অবস্থিত একটি মুঘল নিদর্শন |
তৈরী করেছেন | আহসানুল্লাহ মনি (চলচিত্র নির্মাতা) |
তৈরীর সময়কাল | ৫ বছর |
নির্মান খরচ | ৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার |
তৈরীর উপকরন | মার্বেল পাথর (ইতালী থেকে), হীরা (বেলজিয়াম থেকে), ব্রোঞ্জ |
খোলার সময়সূচী | তাজমহল প্রতিদিন খোলা থাকে সকাল ১০ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত |
টিকেট মূল্য | জনপ্রতি প্রবেশ ফি ১৫০ টাকা |
তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ
সময়টা ছিল ১৪ই এপ্রিল ২০১৩ তারিখ। ঢাকায় ছালেআহাম্মদ মামার বাসায় বেড়াতে এসেছি ২ দিন হল। মামার ২ সন্তান। বড় মেয়ে পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। আর ছোট ছেলে পড়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে। দুইটা ই আমাকে খুব ভালোবাসে। আমি ওদের বাসায় গেলেই অন্যরকম এক আনন্দ বয়ে যায়। থাক সে কথা না হয় আরেক দিন বলব।
আরও পড়ুন: ঢাকা জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ
রাতে ডিনার শেষে আমরা সবাই সোফায় বসে টিভি দেখছিলাম। প্রথমে মামানি কথা বলা শুরু করলেন। মামা কে বললেন, চলো আগামীকাল ওদের নিয়ে কোথাও থেকে ঘুরে আসি। প্রথমে মামা কাজের ব্যস্ততা দেখালেও পড়ে আমাদের পিড়াপিড়িতে রাজি হলেন।
কিন্তু কোথায় যাওয়া যায়। সবাই আমরা সেটা ই ভাবছিলাম। অনেক জায়গা বাছাই করার পর শেষে সবাই তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ যেতে মন স্থির করলাম। তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ যাব আগামীকাল সকালবেলা।
এর আগে আমরা কেউই তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ যাই নি। টিভি দেখার পর আমরা সবাই যার যার রুমে চলে গেলাম ঘুমানোর জন্য।
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা রেডি হতে থাকলাম তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ যাওয়ার জন্য। আমারা খুব এক্সাইটেড ছিলাম। আমরা সকালের নাস্তা শেষ করলাম। তারপর তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম সকাল ৯.৩০ মিনিট এর দিকে।
মামার বাসা যাত্রাবাড়ী। বাসা থেকে বের হয়ে আমারা একটা সি এন জি রিজার্ভ করলাম। সি এন জি আমাদের নিয়ে চলল তাজমহল সোনারগাঁও এর দিকে। পথিমধ্যে মামানি হঠাৎ বমি করা শুরু করলেন। আমরা সি এন জি থামিয়ে যাত্রা বিরতি দিলাম এবং মামানি সুস্থ হওয়ার অপেক্ষা করতে থাকলাম।
প্রায় ৩০ মিনিট পর আমাদের সি এন জি আবার চলতে থাকল। প্রায় দুপুর ১১ঃ৩০ মিনিট এর পর আমাদের সি এন জি গিয়ে তাজমহল সোনারগাঁও এর কাছাকাছি থামল। এদিকে ভাঙাচুরা কাচা রাস্তা। আমরা সি এন জি থেকে নেমে হাটা শুরু করলাম। প্রায় ৩০ মিনিট হাটার পর আমরা তাজমহল সোনারগাঁও এসে পৌছালাম।
মামা তাজমহল এ ঢুকার জন্য টিকেট সংগ্রহ করলেন। আমরা ভিতরে প্রবেশ করলাম। প্রবেশ মুখে কি কি দেখেছি সেটা ২০১৮ সালে এসে আর মনে করতে পারছিনা। ভুলে গিয়েছি 🙁
যাইহোক আমরা তাজমহল এর ভিতরে প্রবেশ করলাম। চমৎকার জায়গা এই তাজমহল সোনারগাঁও । একপলক দেখাতেই ভালো লেগে গেলো। তাজমহল এর চার কোণে চারটি বড় মিনার, মাঝখানে মূল ভবন, সম্পূর্ণ টাইলস করা। সামনে পানির ফোয়ারা, চারদিকে ফুলের বাগান, দুই পাশে দর্শনার্থীদের বসার স্থান। এখানে রয়েছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রাজমনি ফিল্ম সিটি রেস্তোরাঁ, উন্নতমানের খাবার-দাবারের ব্যবস্থা। রয়েছে রাজমনি ফিল্ম সিটি স্টুডিও। ইচ্ছা করলে যে কোনো দর্শনার্থী এখানে ছবি তুলতে পারবেন। তাজমহলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী, জামদানি শাড়ি, মাটির গহনাসহ আরও অন্যান্য পণ্য সামগ্রী।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন ট্যুর
সব মিলিয়ে খুব দারুণ লেগেছে তাজমহল এ কাটানো সময়। আমার কাছে যেহেতু ভালো ক্যামেরার মোবাই ছিল না তাই মামানির নোকিয়া মোবাইল দিয়ে কিছু ছবি তুলে নিলাম। এখানে অনেক পর্যটক আসে ঘুরতে। সময় পেলে আপনি ও চলে যেতে পারেন তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমণ এ।
কীভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরত্বে বাংলার তাজমহলে খুব সহজেই যাওয়া যায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে কুমিল্লা, দাউদকান্দি অথবা সোনারগাঁগামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে মদনপুর বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়। সেক্ষেত্রে ভাড়া লাগে ১৫ টাকা। সেখান থেকে সিএনজি বা স্কুটারে জনপ্রতি ২৫ টাকা ভাড়ায় সহজে যাওয়া যায় তাজমহলে।
অন্যভাবে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে ভৈরব, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জগামী যেকোনো গাড়িতে চড়ে বরপা বাসস্ট্যান্ডে নামতে হয়, সেক্ষেত্রে ভাড়া হবে ২০ টাকা। এখান থেকে সিএনজি স্কুটারে জনপ্রতি ১০ টাকা ভাড়ায় পৌঁছে যেতে পারেন তাজমহল সোনারগাঁও।
আশাকরি চমৎকার এক অভিজ্ঞতা হবে তাজমহল সোনারগাঁও ভ্রমন এ।
এছাড়া, তাজমহলের কাছাকাছি পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম মিশরের পিরামিডের আদলে গড়ে তোলা হয়েছে পিরামিড। করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর। সে বিষয় নিয়ে আরেক ব্লগে লিখব। আজ এই পর্যন্ত ই। ভালো থাকবেন। কথা হলে অন্য কোন ব্লগে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজার ভ্রমণ
ফেসবুক: Kuhudak