সেন্টমার্টিনকে কেন প্রবাল দ্বীপ বলা হয়। বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, যা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের নীল জলের মাঝে অবস্থিত। সেন্টমার্টিন দ্বীপের অপরূপ সৌন্দর্য, পরিবেশ এবং বৈচিত্র্যময় প্রাণিজগতের কারণে এটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য। কিন্তু এই দ্বীপকে কেন ‘প্রবাল দ্বীপ’ বলা হয়? চলুন এই বিষয়টি বিশ্লেষণ করি।
আরও: বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ কোনটি
প্রবালের বৈজ্ঞানিক ধারণা
প্রবাল একটি সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী যা মূলত ক্যালসিয়াম কার্বোনেট দিয়ে তৈরি। এরা উপনিবেশ গঠন করে এবং ধীরে ধীরে প্রবালপ্রাচীর বা রিফ তৈরি করে। এই রিফগুলো একদিকে সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যের জন্য আবাসস্থল এবং অন্যদিকে সৈকতকে রক্ষা করার জন্য প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা হিসেবে কাজ করে।
সেন্টমার্টিনে প্রবালের উপস্থিতি
সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারপাশে বিস্তৃত প্রবালপ্রাচীর এর অন্যতম বড় বৈশিষ্ট্য। এখানে লাল, নীল, সবুজ এবং সাদা রঙের বিভিন্ন ধরনের প্রবাল পাওয়া যায়। সেন্টমার্টিনের ‘গালাচিপা’ নামক এলাকাটি বিশেষভাবে প্রবালপ্রাচীরের জন্য বিখ্যাত।
নামকরণের কারণ
প্রবালের ঘন উপস্থিতির কারণে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে ‘প্রবাল দ্বীপ’ নামে অভিহিত করা হয়। প্রবাল দ্বীপ নামটি শুধু স্থানীয়দের মধ্যে নয়, দেশের অন্যান্য পর্যটকদের কাছেও এটি পরিচিত করে তুলেছে।
পরিবেশগত গুরুত্ব
সেন্টমার্টিনের প্রবালপ্রাচীর কেবল দ্বীপটির সৌন্দর্যই বৃদ্ধি করে না, এটি সামুদ্রিক বাস্তুসংস্থান রক্ষা করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি মাছ, কাঁকড়া এবং অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণীদের আশ্রয়স্থল।
আরও: বাংলাদেশের পর্যটন রাজধানীর নাম কি
প্রবাল দ্বীপ রক্ষার চ্যালেঞ্জ
বর্তমানে সেন্টমার্টিনের প্রবালপ্রাচীর মানবসৃষ্ট নানা কারণে হুমকির মুখে রয়েছে। অতিরিক্ত পর্যটন চাপ, প্লাস্টিক দূষণ এবং প্রবালের উপর পা ফেলার মতো কর্মকাণ্ড প্রবালের জীবনচক্র ব্যাহত করছে।
সংরক্ষণের উদ্যোগ
সেন্টমার্টিনকে প্রবাল দ্বীপ হিসেবে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রবালপ্রাচীর রক্ষায় বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। টেকসই পর্যটন ব্যবস্থা, প্রবালের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে এই দ্বীপের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব।
ফেসবুক: কুহুডাক