পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ হল গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ব-দ্বীপ, যা সাধারণত সুন্দরবন ব-দ্বীপ নামে পরিচিত। এটি দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে বিস্তৃত। এই ব-দ্বীপটি তার আকার, বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রতিবেশ ব্যবস্থা এবং সুন্দরবনের মতো বনভূমির জন্য বিখ্যাত।
আরও: সেন্টমার্টিনকে কেন প্রবাল দ্বীপ বলা হয়
ব-দ্বীপের গঠন
এই ব-দ্বীপটি গঠিত হয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা নদীর পলিমাটি দিয়ে। হিমালয় পর্বতমালা থেকে উৎসারিত এই নদীগুলো সমুদ্রের দিকে বয়ে নিয়ে আসে বিপুল পরিমাণ পলি এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলে জমা করে। এই প্রক্রিয়ায় গঠিত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উর্বর এবং ঘনবসতিপূর্ণ ব-দ্বীপ।
আয়তন ও বৈশিষ্ট্য
- আয়তন: গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ব-দ্বীপের মোট আয়তন প্রায় ১,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার।
- বৈশিষ্ট্য:
- এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনভূমি সুন্দরবনের আবাসস্থল।
- এই অঞ্চলে রয়েছে বিরল ও বিপন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী, যেমন রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার।
- এখানকার মাটি অত্যন্ত উর্বর, যা কৃষির জন্য উপযোগী।
অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত গুরুত্ব
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ব-দ্বীপ শুধু ভৌগোলিকভাবে নয়, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
- কৃষি: এই ব-দ্বীপটি চাল, গম, আখ এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত।
- পরিবেশ: সুন্দরবন বনভূমি জলবায়ু পরিবর্তন এবং ঘূর্ণিঝড় প্রতিরোধে প্রাকৃতিক রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।
- জীববৈচিত্র্য: এখানে শত শত প্রজাতির উদ্ভিদ এবং প্রাণী বাস করে।
আরও: বাংলাদেশের একমাত্র দ্বীপ কোনটি
হুমকি ও চ্যালেঞ্জ
ব-দ্বীপটি বিভিন্ন পরিবেশগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যেমন:
- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি।
- অরণ্য উজাড় এবং জনসংখ্যার চাপে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি।
- নদীর পলি জমে নৌপথ সংকুচিত হওয়া।
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ব-দ্বীপ পৃথিবীর এক অমূল্য সম্পদ। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশগত অবদান এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব অনস্বীকার্য। তবে এই ব-দ্বীপকে সুরক্ষিত রাখতে হলে আমাদের সচেতন হতে হবে এবং পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।
ফেসবুক: কুহুডাক