প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি (Pratappur Zamindar Bari) বা প্রতাপপুর বড় বাড়ি অথবা রাজবাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলার অন্তর্গত দাগনভূঞা উপজেলার প্রায় ২৫০ বছর পুরনো এক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি।
আজকের পোস্টে আমরা দাগনভূঞা উপজেলার প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
আরও: ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক
প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি ভ্রমণ
ভ্রমণ স্থান | প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি |
অবস্থান | প্রতাপপুর, দাগনভূঞা, ফেনী, চট্টগ্রাম |
ধরন | জমিদার বাড়ি |
খোলা হয়েছে | ১৭৬০ সাল |
স্বত্বাধিকারী | রাম সুন্দর সাহা ও রামচন্দ্র সাহা |
উপাদান | ইট, সুরকি ও রড |
আয়তন | ১৩ একর |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | ১৭৪ কিলোমিটার (প্রায়) |
ফেনী থেকে দূরত্ব | ১৮ কিলোমিটার (প্রায়) |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
প্রায় ১৭৬০ সালে প্রতাপপুর জমিদার বাড়িটি নির্মিত হওয়ার পর থেকে অত্র অঞ্চলে জমিদারদের অবস্থান ছিল সবার উপরে। জমিদাররা এই বাড়ি থেকেই অত্র এলাকার শাসনকার্য পরিচালনা করতেন।
আরও: জাহাপুর জমিদার বাড়ি
ইতিহাস ও অবকাঠামো
আজ থেকে প্রায় ২৫০ বছর পূর্বে ১৭৬০ সালের দিকে এই জমিদার বাড়িটি নির্মান করা হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিন কড়ি সাহার ২ ছেলে রাম সুন্দর সাহা ও রামচন্দ্র সাহা।
প্রতাপপুর জমিদার বাড়িটি স্থানীয়দের কাছে প্রতাপপুর বড় বাড়ি বা রাজবাড়ি হিসেবেও পরিচিত রয়েছে। জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পরও ২০০২ সাল পর্যন্ত এই জমিদার বাড়িটিতে বসবাস করত জমিদার বংশধররা!
আরও একটি মতে জানা যায় যে, প্রায় ১৮৫০ সালের দিকে কিংবা ১৮৬০ সালে জমিদার রাজকৃঞ্চ সাহা প্রায় ৮০০ শতক জমির উপর দৃষ্টিনন্দন এই জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেছিলেন। জমিদার রাজকৃঞ্চ সাহার ৫ সন্তান ছিল।
জমিদার বাড়িতে মোট ১৩টি মাছ চাষের পুকুর ও বাড়ির বউদের জন্য রয়েছে ৫টি শানবাঁধানো পুকুর ঘাট। আরও জানা যায় যে, সেই সময়ে আশেপাশের অঞ্চলের জমিদাররা সফরবিরতিতে প্রতাপপুর জমিদার বাড়িতে অবস্থান করে থাকতেন।
জমিদার বাড়ির আয়তন প্রায় ১৩ একর। বাড়িটিতে ১০টি ভবন ও ১৩টি পুকুর রয়েছে। আপনি জমিদার বাড়ি ভ্রমণে গেলে দেখতে পাবেন যে, চারিদিক লতাপাতায় ঢেকে রয়েছে আর ভবনগুলোও ধসে পড়ছে প্রায়।
জানা যায় প্রতি বছর বৈশাখ মাসে সনাতন ধর্মালম্বীরা এই জমিদার বাড়িতে ৩ দিন উৎসব পালন করে থাকেন। আপনি ভ্রমণে গেলে জমিদার বাড়ির পাশে জমিদারদের তৈরী প্রতাপপুর উচ্চ বিদ্যালয় দেখতে পাবেন।
আরও: রূপসা জমিদার বাড়ি
কিভাবে যাবেন
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে জমিদার বাড়ি ভ্রমণে আসতে পারবেন। রাজধানী ঢাকা থেকে ভ্রমণে আসতে চাইলে, ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে ফেনীর বাস পাবেন। এছাড়া সরাসরি মহিপালে নামতে পারেন। মহিপাল বাস স্ট্যান্ড হতে নোয়াখালীগামী সুগন্ধা কিং বাসে করে সেবারহাট বাজারে নামবেন।
সেবারহাট বাজারে নেমে প্রতাপপুর বাজার যাওয়ার CNG পাবেন। প্রতাপপুর বাজারের ঠিক পাশেই রয়েছে প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি।
আপনি চাইলে ট্রেনে যেতে পারেন। ট্রেনে যেতে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ফেনী রেলওয়ে স্টেশন নেমে ইজিবাইক, CNG কিংবা বাসে করে মহিপাল বাস স্ট্যান্ড চলে আসুন। এরপর উপরের নিয়ম ফলো করে জমিদার বাড়ি ভ্রমণে চলে আসুন।
কোথায় খাবেন
ফেনী জেলার বিখ্যাত খাবার হচ্ছে মহিষের দুধের ঘি ও খন্ডলের মিষ্টি। জমিদার বাড়ি ভ্রমণে গিয়ে খাওয়ার জন্য আপনি আশেপাশে রেস্টুরেন্ট পাবেন। তবে ভালো মানের হোটেল পেতে চাইলে ফেনী শহরে চলে যেতে পারেন।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
একদিনের ভ্রমণের জন্য এই স্থানটি চমৎকার। তবে আপনি যদি ভ্রমণে গিয়ে থাকতে চান তাহলে ফেনী শহরে আবাসিক হোটেল হোটেল মিড নাইট, হোটেল গাজী ইন্টরন্যাশনালে থাকতে পারেন।
এছাড়া এলজিইডি রেস্ট হাউস, জেলা পরিষদ ডাক বাংলো, পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউস এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রেস্ট হাউসে অনুমতি নিয়ে থাকতে পারবেন।
ফেসবুক: Kuhudak