জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো। মতলব উত্তর এ ঘুরার মত চমৎকার জায়গা বা পার্ক। এই পার্কটি সমন্ধে তুলনা মাফিক তেমন লোক জানে না। কারন এটা একদম গ্রামের ভেতরে হওয়ায় খুব বেশি পর্যটক এখানে যায় না ।
কিন্তু সত্য কথা বলতে কি এই যায়গাটা খুবই সুন্দর। আর বিশেষ করে যখন আপনি গ্রামের ভেতর দিয়ে অটো রিক্সা করে যাবেন, চারিদিকের গাছগাছালি দেখে যেন মনে হবে আপনি স্বর্গে বসবাস করছেন।


গতকাল ২৭ জুন ২০১৮ তারিখ ঘুরতে গিয়েছিলাম জজ নগর। আজ আমি জজ নগর শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো নিয়ে গো আরিফ ব্লগে বিস্তারিত বলার চেষ্টা করব।
তাহলে চলুন শুরু করা যাক…
একনজরে জজ নগর
পার্কের নাম | জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো |
উদ্বোধন | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ইং |
বাস্তবায়নে | জজ নগর কল্যাণ ট্রাস্ট – ছেংগারচর পৌরসভা, মতলব উত্তর, চাঁদপুর |
উদ্বোধন করেন | জনাব মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া (বীর বিক্রম) এম,পি |
জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো কে কত চমৎকার ভাবে ই না সাজিয়েছেন জজ নগর কল্যাণ ট্রাস্ট। দেখে মুগ্ধ হয়ে যাওয়ার মত।
জজ নগর যাওয়ার পূর্ব প্রস্তুতি
এবার ঈদে গ্রামে এসে বেশ কয়েকজন এর কাছ থেকে জজ নগর এর নাম শুনছিলাম। সবাই বলছে জায়গাটা খুব সুন্দর দেখার মত। আমাকে বলছে, আরিফ ঘুরে আসো… তোমার ভালো লাগবে। খোঁজ নিতে গিয়ে জানলাম আমার মেজো ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন ভাই ও নাকি সেখানে ঘুরতে গিয়েছিল। ভাইয়ার কাছে জিজ্ঞেস করায় ভাইয়া ও ভালো বলল। তাই ঢাকা যাওয়া ২ দিন পিছিয়ে জজ নগর যাওয়ার প্রস্তুতি নিলাম।
২৭ জুন ২০১৮ তারিখ বুধবার। বরাবর এর মত ঘুম থেকে আমার উঠতে একটু দেরীতে হয়ে যায়। ঘুম থেকে উঠেই জাকারিয়াকে কল দিলাম। জাকারিয়া আর আমাদের একই গ্রাম কাজী কান্দি। জাকারিয়া আমার বন্ধু। জাকারিয়া কে কল দেয়ার পর ও রাজি হল যেতে। কিন্তু গাড়ি মেনেজ করি কিভাবে।
গাড়ী ছাড়া এতদূর যাওয়া ও সম্ভব না। আমাদের গাড়ী আমার ভাই নিয়ে গেছে। আমার ভাগিনার গাড়ি নিব ভেবে ভাগিনাকে কল দিলাম কিন্তু ওর মোবাই বন্ধ। জাকারিয়াকে কল দিয়ে বলেদিলাম গাড়ি মেনেজ করতে পারলে তো কে জানাব।
এরপর কল দিলাম আমার আরেক বন্ধু রোবেল খান কে। ওর কিছু কাজ ছিল। রোবেল আমাকে বলল, দোস্ত আমার কাজ গুলো শেষ করে তোকে কল দিচ্ছি। বাধ্য হয়ে ওর কলের অপেক্ষায় রইলাম।
দুপুর ২ টার দিকে ও জানালো আমরা যাচ্ছি বিকাল ৩ টার দিকে। আমি জাকারিয়া কে কল দিয়ে না পেয়ে ম্যাসেজে জানিয়ে দিলাম।
জজ নগর যাওয়ার সময়
বিকাল ৩ টা। জাকারিয়া জাওয়ার জন্য রেডি। আমি হালকা সেজেগুজে রোবেল এর বাসায় চলে গেলাম। রোবেল গোসল করছে। ওকে তৈরি হতে বলে আমি গাড়ী নিয়ে জাকারিয়াকে নিয়ে আসতে গেলাম।
জাকারিয়াকে নিয়ে এসে দেখি রোবেল ও তৈরি। গাড়ি নিয়ে বের হতে যাব ঠিক সেই সময় ই নামল বৃষ্টি! আমি কোন রকমে গাড়ি ঘুরিয়ে গ্যারেজে ঢুকলাম। গাড়ি ঘুরাতে ঘুরাতে কিছুটা ভিজে ও গিয়েছিলাম।


আমরা বসে আছি। বাহিরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। ৫ মিনিট, ১০ মিনিট, ২০ মিনিট যায় কিন্তু বৃষ্টি থামছে না। এভাবে কেটে গেলো প্রায় ৩৫ মিনিট এর মত। আমরা কিছুটা আশা হারিয়ে ফেললাম। মনে হচ্ছিল আজ আর যাওয়া হবে না 🙁
প্রায় ৪০ মিনিট পর বৃষ্টি কমে এলো। আরো ৪ মিনিট যাওয়ার পর এখন আর বৃষ্টি নেই বললেই চলে। কিন্তু আকাশে আলো ছায়ার খেলা চলছে। একদিকের আকাশ অন্ধকার, আরেক দিকের আলো। যাইহোক, সব কিছু উপেক্ষা করে আমরা জজ নগর এর উদ্দেশ্যে গাড়ী ছাড়লাম।
জার্নি বাই মোটরসাইকেল আমরা যাচ্ছি জজ নগর
যাত্রা হচ্ছে ঢ়াড়ী কান্দি টু জজ নগর। দূরত্ব আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার। ঢ়াড়ী কান্দি পার হয়ে আমরা গজরা চলে এসেছি। গাড়ী চলছে আর আমাদের খোশ গল্প চলছে। যেহেতু আমরা মোরসাইকেল এ, তাই কথা বলতে হচ্ছে জোরে জোরে। এর আগে প্রায় ট্যুর গুলো যেমনঃ কক্সবাজার ভ্রমণ, সুন্দরবন ভ্রমণ, খাগড়াছড়ি ট্যুর এ আমি একা ই গিয়েছি। এবারের ট্যুর এ আমরা আছি ৩ জন ( জাকারিয়া, আমি আরিফ হোসেন, রোবেল খান)।
গজরা বাজারে এসে গাড়ী থামালাম ফুয়েল নেয়ার জন্য। ফুয়েল নিয়ে আবার গাড়ী চলতে থাকল জজ নগর এর উদ্দেশ্যে। গজরা বাজার পর কিছুদূর আসার পর হাতের ডানে একটা রাস্তা চলে গিয়েছে ঘনিয়ারপার উপজেলার দিকে। আমাদের গাড়ী সে দিকে ই ছুটে চলল। এদিকে বেশ অনেক গুলো মোর রয়েছে। তবে রাস্তা সম্পূর্ণ পাকা। কোথাও ভাঙ্গা রাস্তা দেখিনি।


আমরা একের পর এক গ্রাম পার হয়ে যাচ্ছি। যেহেতু কিছুক্ষণ আগে ই বৃষ্টি হয়েছে তাই রাস্তা সম্পূর্ণ ভেজা এবং কিছু কিছু জায়গায় রাস্তার পানি রয়েছে। বৃষ্টি হওয়াতে রাস্তার দু পাশের পরিবেশ আমাদের মোহিত করে তুলছিল। বাংলার অপরূপ দৃশ্য আহা সে কি অসাধারণ। তাই তো কবি বলেছিলেন, বাংলার রূপ আমি দেখিয়াছি তাই পৃথিবীর রূপ খুজিতে যাই না আর।
গাড়ী চলছে… এদিকে আকাশ কিছুটা মেঘলা রূপ ধারণ করেছে। মনে হচ্ছে আবার বৃষ্টি হবে। আমাদের গাড়ী চলছে…।
বেশ কিছু রাস্তার মোর পার করে এসেছি। এখন যেখানে আছি এখানে রাস্তার বাক খুব কম। তাই আমাদের গাড়ীর গতি ধীরে ধীরে বেড়েই চলেছে।
জজ নগর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
আবারো কিছু রাস্তার বাক পার হয়ে প্রথমেই আমরা পরিচিত হলাম জজ নগর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এর সাথে। আমরা গাড়ী থামালাম। হেটে দেখলাম মসজিদ এর চারপাশ। মসজিদ টি রাস্তার সাথে ই। রাস্তার অপর পাশে একটি খাল বয়ে গেছে। খাল এর উপর খুব সুন্দর একটি পোল রয়েছে। আমরা পোলে উপর কিছুক্ষণ ঘুরলাম, ছবি তুললাম।
ইতিমধ্যে হালকা বাতাস এর সাথে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আমরা তাড়াতাড়ি গাড়ীতে উঠে পড়লাম। গাড়ী ছাড়তেই বাতাস এর গতি হঠাৎ বেড়ে গেলো। বাতাসের গতি এতো যে আমাদের গাড়ী থামিয়ে দেয়ার মত অবস্থা। আমি গাড়ীর গতি বাড়িয়ে দিলাম। আশেপাশে এমন কোন স্থান নেই যে গাড়ী থামিয়ে একটু দাঁড়াব।
যাই হোক আমাদের মনে হচ্ছিল আমরা খুব কাছাকাছি চলে এসেছি। কিছুদূর আসারপর ছোট একটা ব্রিজ পেলাম। খুব নড়বড়ে ব্রিজ। ভাড়ী কোন গাড়ি গেলে যে কোন সময় ব্রিজ টি ভেঙ্গে পড়তে পারে। ব্রিজ থেকে নেমে বা দিকে মোর নিয়ে সোজা চলে গেলাম। কিছুদূর পরেই রাস্তার পাশে ২ টি দোকান পেলাম। আমরা রাস্তার এক পাশে গাড়ি রেখে দোকানে ঢুকলাম।
জজ নগর এ প্রবেশ
সবাই কিছুটা ভিজে গিয়েছি। আমরা চা খেতে চাইলাম। কিন্তু দোকানদার মামা আমাদের হতাশ করলেন। বললেন, চা নেই। আমাদের সবার প্রিয় লাচ্চি খেলাম সবাই। দোকানে ঢুকার ২ মিনিট এর ভিতর বৃষ্টি থেমে গেছে! আমরা লাচ্চি খাওয়া শেষ করে দোকান্দার মামা কে জিজ্ঞেস করলাম জজ নগর এর কথা। উনি বলেন আসার সময় ডান দিকে যে কয়েকটা বড় বড় বিল্ডিং দেখেছেন এগুলার ভিতরেই।
আমরা গাড়ি ঘুরিয়ে সে দিকে গেলাম। ২ টা বিল্ডিং এর মাঝ খানে দেখি একটা গেইট খোলা রয়েছে। আমরা এটাকেই প্রধান গেইট ভেবে প্রবেশ করলাম। হাতের বা দিকে কিসের যেনো একটা প্রধান কার্যালয়। এরেকটু সামনে হাতের ডানে একটা বৃদ্ধাশ্রম। দেখে প্রথমে খারাপ লাগল যে, এই প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বৃদ্ধাশ্রম! আবার ভালো লাগল এটা ভেবে যে, যিনি এটা করেছেন কতইনা মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে করেছেন। বৃদ্ধাশ্রম এর মানুষ গুলো ভালো থাকুক।
বৃদ্ধাশ্রম এর পরেই একটা গেইট তালা দেয়া! আমরা গাড়ি থামালাম। আমাদের দেখে ভিতর থেকে একজন লোক আসলেন। জজ নগর আজ বন্ধ কিনা জিজ্ঞেস করায় ওনি বললেন, এটা পার্ক এর গেইট না। আপনারা ঐ দিক দিয়ে আসেন। ঐ যে দেখছেন না? ঐ টা ই মেইন গেইট।
আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল বৃদ্ধাশ্রম এর ঢুকার। কিন্তু হাতে একদম ই সময় ছিল না। আমি তখন ই মনে মনে ভেবে নিয়েছিলাম… ইনশাআল্লাহ্ আল্লাহ্ বাচিয়ে রাখলে আবার আসবো এই জজ নগর এ। বৃদ্ধাশ্রম এ আমার বৃদ্ধ দাদা দাদু কে দেখতে।
আমরা গাড়ী ঘুরিয়ে ৩ টা মোর নিয়ে জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো এর প্রধান গেইটে চলে আসলাম। গেইটা মোটামোটি সুন্দর।
জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো
মেইন গেইট এর পর আরেকটা ছোট গেইট। তার পাশেই একটা টিকেট কাউন্টার। আমরা গাড়ী রেখে টিকেট কাউন্টার থেকে ৩ টা টিকেট কাটলাম। ১ টা টিকে ১৫ টাকা করে। আমরা গেইট পার হয়ে জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো এর ভিতরে প্রবেশ করলাম।


ভিতরে খুব সুন্দর জায়গা। ভিতরে তেমন কোন লোক জন লক্ষ্য করা যাচ্ছিল না। শুনেছি বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার নাকি খুব ভিড় হয় এখানে। আমরা গিয়েছি বুধবার। তাছাড়া কিছুক্ষণ আগেও বৃষ্টি হয়েছে। সে জন্য ই মনে হয় লোক জন কম।
আমরা ঘুরে ঘুরে দেখছি আর ছবি তুলছি। কয়েক জায়গায় বসে বিশ্রাম ও নিলাম। ছোট একটা গোলঘর। সেটাতে জাওয়ার জন্য ছোট্র এক ব্রিজ। ব্রিজ এর নিচে পানি! ভালো লাগল ব্যাপারটা। ব্রিজ এর উপর বসে আমরা কিছু ছবি তুললাম।
ভিতরে ছোট ছোট খুব সুন্দর রাস্তা রয়েছে। যেহেতু শিশু পার্ক। বাচ্চাদের জন্য রয়েছে দোলানা সহ অনেক কিছু। একপাশে বেশ উচু টংঘর। তারপাসে বেশ বড় পাকা করা সুইমিং পুল। পুল এর ভিতর বেশ কয়েকটা ছোট নৌকো রয়েছে। চাইলে ই আপনি সে গুলো তে চড়তে পারবেন।


এখানে দুই পাশে বেশ বড় দুইটি সুইমিং পুল মাঝখান দিয়ে একসাথে মিলিত হয়েছে। যে স্থানে মিলিত হয়েছে, ঠিক তার উপরেই বেশ বড় একটি বাকানো ব্রিজ রয়েছে। সেখানে দাঁড়ালে আপনি এই জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো এর প্রায় সব কিছুই দেখতে পাবেন।
জজ নগর মিনি জো
জজ নগর এ রয়েছে ছোট একটি চিরিয়াখানা। যেখানে রয়েছে- ঘোড়া, বিরল প্রজাতির পাখি, সাপ, খরগোশ, হাঁস, কয়েক প্রজাতির মোরগি, বানর ইত্যাদি।
আমরা এক এক করে সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম। ছবি তুললাম, ভিডিও করলাম। ঘোড়া এখানে ছেড়ে দেয়া আছে। আমি সেটার কাছে গিয়ে ছবি তুলার চেষ্টা করলাম।
এই যে ঘোড়া!


জজ নগর এর পরিবেশ
জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো এর পরিবেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় ঘোড়ার মল পাওয়া গিয়েছে। ভিতরের রাস্তার দুই পাশে সুন্দর সুন্দর ফুল গাছ লাগানো রয়েছে। সবমিলিয়ে বলা যায় যে খুবই চমৎকার পরিবেশ।


সুইমিং পুল এ কিন্তু আবার মাছ আছে। ছোট না বড় মাছ! আপনার সাথে হয়তো বড় কোন মাছ এর দেখা হয়ে যেতে পারে।
জজ নগর কে বিদায়
ঘুরতে ঘুরতে আমাদের সময় শেষ হয়ে এলো। সূর্য পশ্চিম আকাশে ডুবার মত অবস্থা। তারপর ও আমাদের ঘুরা শেষ হচ্ছিল না। মাঝখানে অবশ্য আমি ৩৬০ ডিগ্রি ছবি নিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেটা ঠিক মত উঠেনি 🙁
সব শেষে আমরা জজ নগর কে বিদায় জানতে প্রস্তুতি নিলাম। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে আমাদের বাড়ী ফিরতে হবে। আমরা গেইট দিয়ে বেরহয়ে গাড়ীতে উঠলাম বাড়ী যাওয়ার উদ্দেশ্যে। সাথে নিয়ে গেলাম চমৎকার এক স্মৃতি। আমি জজ নগর কে কখনো ভুলব না।
পরিশেষে ধন্যবাদ জানাই তাদের যারা এই জজ নগর (Judge Nagar) শামীমা রাতুল শিশু পার্ক ও মিনি জো তৈরি তে কাজ করেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ জজ নগর কল্যাণ ট্রাস্ট কে।
সবাই ভালো থাকবেন। কথা হবে অন্য কোন ব্লগে। আল্লাহ্ হাফেজ।
ফেসবুক: Kuhudak