আই সি ডি ডি আর বি মতলব ভ্রমণ – icddr, b Matlab Tour নিয়ে আজকের ব্লগ। ব্লগের শুরুতে প্রথমেই দুঃখ প্রকাশ করতে হচ্ছে!
কারন, আই সি ডি ডি আর বি মতলব ভ্রমণ -এ গিয়ে ক্যামেরা দিয়ে যে ছবি গুলো তোলা হয়েছিল তার সব গুলো ছবিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে!
ছবি গুলো যে মেমোরিতে রেখেছিলাম, সেই মেমোরিটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে 🙁 তবে, মোবাইলে তোলা একটা ছবি পেয়েছি। যেটা ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছিল। সেখান থেকেই ছবিটা নিয়ে আজকের ভ্রমণ ব্লগের কভার ছবি হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে।
একনজরে আই সি ডি ডি আর বি মতলব
ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডাইরিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশ, সংক্ষেপে আই সি ডি ডি আর, বি ( ICDDR,B ) বাংলাদেশের একটি চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
ভ্রমণ স্থান | আই সি ডি ডি আর, বি (ICDDR,B) |
অবস্থান | মতলব, চাঁদপুর |
প্রধান শাখা | ৪টি |
গঠিত | ১৯৬০ ইং |
সদর দপ্তর | ঢাকা |
এর পূর্ণ ইংরেজি নাম হচ্ছে “International Centre for Diarrhoeal Disease Research, Bangladesh” যার অর্থ “আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ”।
অবস্থান: মতলব এবং মহাখালী
ভারতীয় উপমহাদেশে একসময় কলেরা রোগের ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছিল। তখন থেকেই এই আই সি ডি ডি আর বি এর উৎপত্তি।
আই সি ডি ডি আর বি এর আগে নাম ছিলঃ Pakistan-SEATO Cholera Research Laboratory
এখানে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পৃথক চারটি শাখা রয়েছে। শাখাগুলির কার্যক্রমের মাধ্যমে এই কেন্দ্রে প্রতিবছর প্রায় ১২,০০০ উদরাময় রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকে তারা।
প্রধান শাখাগুলি হল:
- ক্লিনিক্যাল বিজ্ঞান শাখা
- গবেষণা বিজ্ঞান শাখা
- সামাজিক স্বাস্থ্য শাখা
- জনসংখ্যা সম্প্রসারণ শাখা
আরো মজার বিষয় হচ্ছেঃ মতলব এ বসবাসকারী প্রায় ২ লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর সমীক্ষা পরিচালনা এবং পর্যবেক্ষণই করা হয়।
আরো পড়ুন: খোদাই পুকুর রহস্য – মতলব, চাঁদপুর
ভ্রমণের প্রস্তুতি
ডাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, আমার মেঝো ভাই। MBBS কমপ্লিট করেছেন সিলেট এর এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে।
ভাই কিছুদিন আগে একটা প্রজেক্ট এ ২ বছরের জন্য আই সি ডি ডি আর বি মতলব এ যোগ দিয়েছেন।
তো আমাকে অনেক দিন ধরেই ওনার সাথে আই সি ডি ডি আর বি তে যাওয়ার কথা বলছিলেন। আমি সময় করে উঠতে পারছিলাম না।
ভাই প্রায়শই বাসায় এসে হাসপাতাল এর গল্প করেন।
ভ্রমনের দিন
ফুটবল খেলে বুকে ব্যথা পেয়েছি। ভাই বললেন চল হাসপাতাল গিয়ে এক্সরে টাও করে আসবি সাথে আই সি ডি ডি আর বি টাও ঘুরে দেখে আসলি।
আমি রাজি হয়ে গেলাম…।
সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ভাই এর গাড়ীতে করে রওনা দিয়ে দিলাম। মতলবে পৌছে প্রথমে নিউ ল্যাব এইড থেকে বুকের এক্সরে করে নিলাম।
ভাই এখানেও সপ্তাহে ২ দিন রুগী দেখতে বসেন। তাই ফ্রি ফ্রি এক্সরে করে ফেললাম। না চাইলেও জোর করে নাস্তাও করালেন তারা।
আরও পড়ুনঃ কক্সবাজার ভ্রমণ
আই সি ডি ডি আর বি মতলব ভ্রমণ
মতলব বাজার থেকে কিছুটা দক্ষিণ দিকে অবস্থান এই আই সি ডি ডি আর বি। রাস্তার ঠিক পাশেই। ব্রিজ পার হলেই প্রধান গেইট।
এখানে চাইলেই যে কেউ ঢুকতে পারে না। তবে রুগীদের অনুমতি মিলবে সহজেই।
আর যারা ডাক্তার বা অফিসার রয়েছেন, তাদের কে কার্ড দেখিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে হয়।
বর্তমানে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেয়ার সিস্টেম চালু করা হয়েছে।
ভিতরের পরিবেশ
আই সি ডি ডি আর বি মতলব এর ভিতরের পরিবেশ খুবই ভালো। কোন নোংরা কিছু চোখে পরেনি আমার।
গেইট দিয়ে ঢুকার সময় আমাকে একটা ভিজিটর কার্ড গলায় পড়িয়ে দেয়া হল। সাথে যাওয়ার সময় এটা আবার জমা দেয়ার কথাও মনে করিয়ে দিল।
হাতের বা দিক দিয়েও যাওয়া যায়। কিন্তু আমি আর আমার ভাই গেলাম সোজা। ভাই প্রথমে তার ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিলেন।
তারপর আমরা এক এক করে প্রায় সবকটি ওয়ার্ডেই ঘুরলাম।
ভাই এর চেম্বারে গেলাম। সেখানে অনেক রুগীর ভীড়। তবে সব কটা রুগীই শিশু। সাথে তাদের মা।
ভাই আমাকে তার রুমের একটা চেয়ারে বসিয়ে দিলেন। তারপর কয়েকটা বাচ্চা কে দেখলেন।
আই সি ডি ডি আর বি পরীক্ষাগার
ভাই আমাকে আই সি ডি ডি আর বি এর পরীক্ষাগার এ নিয়ে গেলেন। এটা ২য় তলায় অবস্থিত।
সেখানে সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সবার সাথে কিছুক্ষন কথা হল আমার। কথা বলে মনে হলঃ
সবাই বেশ মজার মানুষ।
আমি তাদের সাথে ছবি তুললাম। ( ছবির কথা মনে হতেই খারাপ লাগছে 🙁 কেন যে মেমোরি কার্ড টা নষ্ট হল )
আই সি ডি ডি আর বি ক্যান্টিন
দুপুরে আমরা আই সি ডি ডি আর বি এর ক্যান্টিন – এ খেতে গেলাম। এখানে শুধুমাত্র ডাক্তাররা এবং অফিস স্টাফ রা খেতে পারেন। বাহিরের কারো অনুমতি নেই।
খাওয়ার সিস্টেম আলাদা। সেমনঃ এখানে খাওয়ার জন্য সরাসরি টাকা দেয়া নেয়ার কোন সিস্টেম নাই।
যারা এখানে খাওয়াদাওয়া করেন তাদের জন্য ৫০০ টাকা এবং ১০০০ টাকা দিয়ে বিশেষ টোকেন নিতে হয়।
টোকেনে ১০০০ টাকা যথাক্রমে এভাবে থাকেঃ ৩০, ২০, ১০, ৫, ৫০, ১০০।
আপনি যে খাবার ওয়ার্ডার দিবেন, সেটার পরিমান যত টাকা হবে আপনি টোকেন ছিড়ে দিলেই হবে।
খাবার রেডি করার পর আপনাকে নিজ হাতে সেটা টেবিলে নিয়ে আসতে হবে। এখানের খাবার সিস্টেম টা আমার খুবই ভালো লেগেছে।
ক্যান্টিন এর পরিবেশটাও ছিল দারুন।
লাঞ্চের পর ঘুরাঘুরি
আই সি ডি ডি আর বি ক্যান্টিন এর পাশেই বিশাল একটা পুকুর রয়েছে। লাঞ্চের পর আমরা পুকুর এর পাড় ঘেষে হাটাহাটি করলাম।
কয়েকটা বাচ্চাদের ওয়ার্ডে গেলাম। দেখলাম অনেক মা তাদের বাচ্চাদের সেবা করছেন। সাথে ডাক্তার রা ও…
বড়দের ওয়ার্ডেও গেলাম। তবে বেশিক্ষণ থাকতে ইচ্চা করেনি। এখানে অবশ্য সব ইমারজেন্সি রোগীরা ভর্তি হন।
ফেসবুক: Kuhudak
সালাম নিবেন ভাই , আমি আপনার ব্লগের নিয়মিত একজন পাঠক , আপনি খুব ভাল লিখেন ,
লিখবেন প্রতিদিন ,আসা করি , আল্লাহ আপনাকে সুস্থ রাখুক।
ওয়ালাইকুম আসালাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ভবিষ্যতেও ব্লগে নিয়মিত আসবেন আশাকরি।
ধন্যবাদ। <3