গাবখান চ্যানেল ও সেতু (Gabkhan Channel & Bridge) বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলার সাথে পিরোজপুর জেলার সংযোগকারী একটি খাল। গাবখান সেতু, গাবখান নদী নামেও অনেকের কাছে পরিচিত। আর বাংলার সুয়েজ খাল খ্যাত গাবখান চ্যানেলের উপর প্রতিষ্ঠিত ৫ম বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সেতুটিই হচ্ছে গাবখান সেতু।
আজকের পোস্টে আমরা গাবখান চ্যানেল ও সেতু সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
ভ্রমণ স্থান | গাবখান চ্যানেল ও সেতু |
ধরন | চ্যানেল ও সেতু |
অবস্থান | ঝালকাঠি, বরিশাল |
চ্যানেলের দৈর্ঘ্য | প্রায় ১৮ কিলোমিটার |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | ২১৩ কিলোমিটার (প্রায়) |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
আপনি জানেন কি? সন্ধ্যা ও সুগন্ধা নদীর মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী বাংলাদেশের একমাত্র কৃত্রিম নৌপথ গাবখান চ্যানেলের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ কিলোমিটার। এখানে দুইপাশে সবুজের সমারোহ নিয়ে বয়ে চলা এই চ্যানেল বা খালটি সৌন্দর্যের দিক দিয়ে বাংলাদেশে অদ্বিতীয় বলা যায়।
আরও: তেঁতুলিয়া জামে মসজিদ
ইতিহাস
ঢাকা থেকে মংলা এবং চট্টগ্রাম থেকে মংলা নদীপথের দূরত্ব প্রায় ১১৮ কিলোমিটার (৭৩ মাইল) কমানোর লক্ষ্যে পিরোজপুর জেলার সন্ধ্যা নদীর সাথে ঝালকাঠি জেলার সুগন্ধা নদীকে সংযুক্ত করতে ১৯১৮ সালে ব্রিটিশ আমলে খালটি খনন করা হয়েছিল। এই খালের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ কিলোমিটার এবং ১৯৫০ সালে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠার পর চ্যানেলটি আন্তর্জাতিক নৌপথ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
পূর্বেই বলেছি এটি বাংলাদেশের সুয়েজ খাল হিসবে পরিচিত। এই কৃত্রিম জলপথের উপর ২০০২ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উচ্চতম একটি সেতু নির্মিত হয়েছিল। সেতুটি গাবখান সেতু নামেও পরিচিত।
আপনি যদি প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন গাবখান চ্যানেলের নৌপথের রুপে বিমোহিত হতে চান তাহলে কোন প্যাডেল স্টীমারের ফ্রন্ট ডেকে চড়ে বসতে পারেন। এখানে বানানো সেতুটির অপূর্ব নির্মাণশৈলী অন্যান্য সকল সেতু থেকে একে দিয়েছে বিশেষ স্বতন্ত্রতা।
গাবখান চ্যানেল ভ্রমণ
গাবখান চ্যানেল দিয়ে ৪টি প্যাডেল স্টিমার যাতায়াত করে থাকে। লেপচা, মাহসুদ, অস্ট্রিচ ও টার্ন স্টিমার শনি, রবি, মঙ্গল, বুধবার সদরঘাট থেকে সন্ধ্যা ৬:৩০ মিনিটে ছেড়ে যায়। ঢাকা টু মোড়েলগঞ্জ ডেকের ভাড়া ৩০০ টাকা, ননএসি ডাবল কেবিনের ভাড়া ২৫০০ টাকা, এসি ডাবল কেবিনের ভাড়া ৪০০০ টাকা নিতে পারে।
আরও: বাংলাদেশের সেরা ৫০ টি দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র
কিভাবে যাবেন
গাবখান চ্যানেল ও সেতু দেখতে চাইলে প্রথমে আপনাকে ঝালকাঠি জেলায় আসতে হবে।
ঢাকা থেকে ঝালকাঠি বাস ভ্রমণ
আপনি ঢাকা থেকে এসি ও নন-এসি হানিফ, সাকুরা, সার্বিক, সোনার তরী, সুরভী পরিবহণের বাসে করে ঝালকাঠি চলে আসতে পারেন।
ভাড়া: এসি বা নন-এসি বাসের ভাড়া ৬০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা নিতে পারে।
এরপর ঝালকাঠি জেলার ফায়ার সার্ভিস মোড় থেকে অটোরিক্সা ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে গাবখান ব্রিজ পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়া পিরোজপুরগামী বাসে চড়ে গাবখান সেতু নামতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
ঝালকাঠি ভ্রমণে গেলে কালিবাড়ী রোডের সকাল-সন্ধ্যা সুইটসের লুচি-ভাজি, ঘোষ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মিষ্টি এবং রসমালাই খেয়ে আসতে ভুলবেন না। এছাড়া এখানে খাবারের হোটেল রয়েছে।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
আপনি ঝালকাঠি জেলা শহরে থাকার জন্য মোটামুটি মানের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল পাবেন। এখানে থাকার জন্য ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকা খরচ হতে পারে।
ফেসবুক: Kuhudak