বগুড়া জেলা পরিচিতি ইংরেজিঃ Bogra District । বগুড়া জেলা বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের একটি প্রশাসনিক এলাকা।
আজকে আমি আপানার সাথে বগুড়া জেলা পরিচিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তো চলুন শুরু করা যাক…।
আরও: মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
বগুড়া জেলা পরিচিতি
বগুড়া জেলা ম্যাপ
হাই রেজুলেশন ম্যাপ দেখতে এখানে ক্লিক করুনঃ বগুড়া জেলা ম্যাপ
একনজরে বগুড়া জেলা পরিচিতি
দেশের নাম | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী |
জেলা | বগুড়া |
জেলার আয়তন | ২৮৯৮.২৫ কিমি২ (১১১৯.০২ বর্গমাইল) |
নির্বাচনী আসন | ৭ টি |
পোস্ট কোড | ৫৮০০ |
প্রশাসনিক কোড | ৫০ ১০ |
জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় | ১৮২১ সাল |
উপজেলা | ১২ টি |
পৌরসভা | ১২ টি |
ইউনিয়ন | ১০৮ টি |
গ্রাম | ২,৬৯৫ টি |
মৌজা | ১,৭৫৯ টি |
জনসংখ্যা | ৩৫,৩৯,২৯৪ প্রায় (২০১১) |
জনসংখ্যার ঘনত্ব | ৩২০০ জন (প্রতি বর্গ কি.মি.) |
পুরুষ | ১৭,৭৮,৫২৯ জন |
নারী | ১৭,৬০,৭৬৫ জন |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর নং | ৭ |
আরও তথ্য
মোট ভোটার সংখ্যা | ২১,৭২,৮৩৫ জন (২০০৯) |
পুরুষ ভোটার সংখ্যা | ১০,৬২,৯৫৭ জন |
মহিলা ভোটার সংখ্যা | ১১,০৯,৮৭৮ জন |
চাষযোগ্য জমির পরিমাণ | ২,২৩,৪১০ হেক্টর |
পতিত জমি | ৫,৩৪৩ হেক্টর |
মাথাপিছু জমির পরিমাণ | ০.২১ হেক্টর |
হিমাগার | ২৯ টি |
বড় শিল্প কারখানা | ১২০ টি |
মাঝারি শিল্প কারখানা | ১৯ টি |
ক্ষুদ্র শিল্প | ২৩৫১ টি |
কৃষি ভিত্তিক শিল্প | ৭৪৫ টি |
বগুড়া জেলার শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য
সাক্ষরতার হার | ৪৯.৪৬% |
বিশ্ববিদ্যালয় | ১ টি |
সরকারী মেডিকেল কলেজ | ১টি |
বেসরকারী মেডিকেল কলেজ | ১টি |
সরকারী প্রকৌশল কলেজ | ১টি |
সরকারী কলেজ | ৮ টি |
বেসরকারি কলেজ | ৭৬ টি |
সরকারী মাদরাসা | ১টি |
সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় | ১,৫৬৮ টি |
বেসরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয় | ৪০২ টি |
সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় | ১,৫৬৮ টি |
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | ২৩ টি |
সরকারী পলিটেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট | ১ টি |
ভিটিটিআই | ১ টি |
পিটিআই | ২ টি |
টিটিসি | ১ টি |
আর্ট কলেজ | ১ টি |
আইএইচটি | ১ টি |
বগুড়া জেলার উপজেলা সমূহ
বগুড়া জেলার উপজেলা সমূহের নাম, আয়তন এবং শিক্ষার হার নিম্নে দেয়া হল।
উপজেলার নাম | আয়তন (বর্গ কিমি) | শিক্ষার হার (%) |
আদমদীঘি | ১৬৮.৮৪ | ৫০.৪ |
শেরপুর | ২৯৬.২৭ | ৩৬.৩ |
কাহালু | ২৩৮.৭৯ | ৪৭.৯ |
গাবতলী | ২৩৯.৬০ | ৩৯.৭ |
দুপচাঁচিয়া | ১৬২.৪৫ | ৪৫.৪ |
ধুনট | ২৪৭.৭৩ | ৩১.১ |
নন্দীগ্রাম | ২৬৫.৪৭ | ৪২.২ |
শাজাহানপুর | ২১৫.৬৪ | ৪৮.৫৯ |
বগুড়া সদর | ১৯৭.৭৫ | ৫৫.৫ |
শিবগঞ্জ | ৩১৫.৯২ | ৩৬.০ |
সারিয়াকান্দি | ৪০৮.৪৫ | ৩২.৩ |
সোনাতলা | ১৫৬.৭৩ | ৩৭.৯ |
বগুড়া জেলার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য
সরকারী হাসপাতাল | ১৭ টি |
বিছানা সংখ্যা | ১,২৮০ টি |
ডাক্তার সংখ্যা | ৩০৬ জন |
বেসরকারী হাসপাতাল | ১৫৫ টি |
বিছানা সংখ্যা | ১,৫০০টি (প্রায়) |
বগুড়া জেলার ধর্ম পরিসংখ্যান
মুসলিম | ২৮১৯৪৩২ জন |
হিন্দু | ১৯১৫২৮ জন |
বৌদ্ধ | ৬৬৬ জন |
খ্রিস্টান | ২৯৭ জন |
অন্যান্য | ১১৩৩ জন |
বগুড়া জেলার যোগাযোগ সম্পর্কিত তথ্য
নদী | ১৮টি |
পাকা রাস্তা | ৫৩৯.৭১ কিঃ মিঃ |
কাঁচা রাস্তা | ৩৭.৫ কিঃ মিঃ |
রেলপথ | ৭১ কিঃ মিঃ |
বগুড়া থেকে ঢাকার দূরত্ব | ২২৯ কিঃমিঃ |
বগুড়া জেলা ইতিকথা
এশিয়া মহাদেশের বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা হচ্ছে বগুড়া। বগুড়া জেলা ২৪°৩২র্ – ২৫°১৮র্ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮°৫৭র্ – ৮৯°৪৪র্ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত।
প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধনই হচ্ছে এ বগুড়া জেলা। মৌর্য, গুপ্ত, পাল, সেন প্রভৃতি রাজাদের প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিল প্রাচীন জনপদ বগুড়া। বগুড়া জেলা শহর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৫০ সালে এবং বগুড়া পৌরসভা গঠিত হয় ১৮৮৪ সালে।
জেলাটির উত্তরে জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলা, দক্ষিণে চলনবিল, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলা, পূর্বে যমুনা নদী ও জামালপুর জেলা এবং পশ্চিমে চলনবিলের অংশবিশেষ, নাটোর ও নওগাঁ জেলা অবস্থিত।
বগুড়া জেলার আয়তন ২৮৯৮.২৫ কিমি২ বা ১১১৯.০২ বর্গমাইল। এই আয়তনে ৩৫,৩৯,২৯৪ প্রায় (২০১১) জনসংখ্যার বসবাস। তার মধ্যে মুসলিম ২৮১৯৪৩২ জন, হিন্দু ১৯১৫২৮ জন, বৌদ্ধ ৬৬৬ জন, খ্রিস্টান ২৯৭ জন, অন্যান্য ১১৩৩ জন ধর্মালম্বীদের বসবাস। এই জেলার সাক্ষরতার হার ৪৯.৪৬%।
২০০১ সালের গনণানুযায়ী এই জেলার লোকসংখ্যা ছিল ৭৫২১১৮ জন। ১২টি উপজেলা যথা, শাহজাহানপুর, শেরপুর, ধুনট, সারিয়াকান্দি, গাবতলী, সোনাতলা, নন্দীগ্রাম, কাহালু, দুপচাঁচিয়া, শিবগঞ্জ, বগুড়া সদর এবং আদমদীঘি নিয়ে বগুড়া জেলা গঠিত।
১২টি উপজেলার অন্তর্গত রয়েছে ১০৮টি ইউনিয়ন, ১৩৯৯টি মৌজা। এই জেলার মোট গ্রামের সংখ্যা ২,৬৯৫ টি। মুক্তিযুদ্ধের সময় বগুড়া ৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল।
আরও: ভাসু বিহার
বগুড়া জেলার ইতিহাস
খ্রিষ্টপূর্ব ৪র্থ শতকে বগুড়া মৌর্য শাসনাধীনে ছিল। মৌর্য এর পরে এ অঞ্চলে চলে আসে গুপ্তযুগ। এরপর একএক করে শশাংক, হর্ষবর্ধন, যশোবর্ধন পাল, মদন ও সেনরাজ বংশ।
আমরা বগুড়া ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করব। সময় নিয়ে বিস্তারিত পড়ুন আশাকরি বগুড়ার অনেক ইতিহাস জানতে পারবেন।
বগরা খাঁর নামানুসারে বগুড়ার নামকরণ করা হয়েছে তা আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। করতোয়া নদীর তীরসংলগ্ন যে ভূমিটি রয়েছে তা ছিল হিন্দু আমলের গৌড়েশ্বরের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধন, হযরত শাহ্ সুলতান বলখী মাহীসাওয়ারের তীর্থভূমি যা আজকের মহাস্থান।
একদা অনেক মনীষী, পর্যটক, পীর-ফকির-আউলিয়ার পদপাতে ধন্য হয়ে উঠেছিল এই ছোট্ট জনপদ বগরা। তখন এই বগরা জনপ্রিয় ছিল ব্যবসা বাণিজ্যের তীর্থকেন্দ্র হিসেবে।
বগরা হিন্দু আমল, সুলতানী আমল, নবাবী আমল, বৃটিশ আমল ও পাকিস্তান আমল পেরিয়ে এই বাংলাদেশ পর্যন্ত বগুড়ার অনেক ইতিহাস রয়েছে। বহু শাসকের উত্থান-পতনের মাধ্যমে অনেক অত্যাচার, শোষণের, বিদ্রোহ-আন্দোলনের, বহু রক্ত-ত্যাগ-তিতিক্ষা-যুদ্ধ-স্বাধীনতার ফলে এই ইতিহাস তৈরি হয়েছে।
বগুড়া হিন্দু আমল
বগুড়া হিন্দু আমলে ১১৩৪ খৃস্টাব্দ থেকে ১১৮৭ খৃস্টাব্দের মধ্যে দু’জন কবির সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। গৌড়ের রাজা মদন পালদেবের সময়ে কবি সন্ধ্যাকার নন্দীর জন্মস্থান উল্লেখ করেছেন মহাস্থান সন্নিকটবর্তী পৌন্ড্রবর্ধনপুর।
তার পিতা কায়স্তদের অগ্রণী ছিলেন। তার পিতার নাম প্রজাপতি নন্দী বলে উল্লেখ করেছেন ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার। পিতা নাম ছিল পিনাক নন্দী। আর সন্ধ্যাকর নন্দীর কাব্যগ্রন্থের নাম ছিল ‘রামচরিয়তম’।
শিবগঞ্জ থানার বিহার গ্রামে জন্মস্থান করেছেন অনিরুদ্ধ ভট্টাচার্য। তাঁর কাব্যগ্রন্থের নাম ছিল ‘হারলতা’। রমেশ চন্দ্র মজুমদারের আরেকটি গ্রন্থে
ছিল নাম ‘পিতৃদয়িতা’।
ঐতিহাসিকগণের মতে তিনি রাজা বল্লাল সেনের সাহিত্যগুরু ছিলেন।
আরও: খেরুয়া মসজিদ
সুলতানী আমল
বগুড়া সুলতানী আমল ১৪০৮ সালের দিকে উদয়নাচার্য ভাদুড়ী নামে একজন গ্রন্থকারের পরিচয় পাওয়া যায়। ভাদুড়ী জন্মগ্রহন করেছিলেন কাহালু থানার নিশিন্দ্রা গ্রামে। কেউ কেউ বলেন, ভাদুড়ী নন্দীগ্রাম থানার নিশিন্দারা গ্রামে জন্মেছিলেন।
নবাবী আমল
নবাবী আমল ১৫৭৬ খৃস্টাব্দের সময় বগুড়া জেলায় বেশকিছু কবি সাহিত্যিকের আবির্ভাব ঘটে ছিল। তাদের ভিতরে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন গদাধর ভট্টাচার্য, রামনারায়ণ ভট্টাচার্য, নিত্যানন্দ আচার্য, কবি বল্লভ এবং জীবনকৃষ্ণ চৈত্র।
প্রভাস সেনের গ্রন্থে তাঁর নাম গঙ্গাধর ভট্টাচার্য কিন্তু কে. এম. মেছেরের গ্রন্থে গদাধর ভট্টাচার্য বলা হয়েছে। গদাধর ভট্টাচার্য লক্ষীচাপড়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেছেন।
তাঁর ২টি গ্রন্থের নাম হলঃ ‘ব্রহ্মনির্ণয়’ ও ‘গদাধরী টীকা’ এবং ‘কৃতভাষ্য’ তাঁর রচনাকর্ম।
১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে ফাল্গুনী পূর্ণিমায় তিনি এই কাব্যটি রচনা করেছিলেন। তাঁর গ্রন্থটি এত দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে যে, কবি বল্লভ ‘রসকদম্ব’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠেন।
মধ্যযুগের কবিদের মধ্যে কবি জীবনকৃষ্ণ মৈত্র সবেচেয়ে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি মহাস্থানের লাহিড়ীপাড়া গ্রামের কবি। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে মনসা মঙ্গলের কবি হিসেবে তার পরিচিতি রয়েছে। জীবনকৃষ্ণ মৈত্রের কাব্যের নাম ‘পদ্মপূরাণ’।
বৃটিশ আমল
বৃটিশ আমলে বগুড়াতে কবি-সাহিত্যিকদের পদচারণার ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৪৮ খৃস্টাব্দের পরবর্তী সময় পর্যন্ত যে সমস্ত কবি-লেখকরা নিজেদের রচনাকর্মের দ্বারা খ্যাতি অর্জন করেন তাঁদের মধ্যে হিন্দুদের পাশাপাশি মুসলিম লেখকদের অবদানও কম ছিল না।
বৃটিশ আমলের মধ্যপর্যায় থেকে যাঁরা সাহিত্য রচনা শুরু করেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেনঃ হরগোপাল দাস কুন্ডু, প্রাণগোবিন্দ দেব, প্রভাসচন্দ্র সেন, কাজী কলিমুদ্দিন, দেববর্শন বিএল, সারদানাথ খাঁ বিএল, মুনশী হামেদ আলী শহরউল্লা, সৈয়দ বাহার উদ্দিন, কোববাদ হোসেন, ডাঃ কহরউল্লা।
বৃটিশ আমলের শেষ ভাগ ৩০ ও ৪০ এর দশক
বৃটিশ আমলের শেষ ভাগ ৩০ ও ৪০ এর দশক এর দিকে যাদের নাম পাওয়া যায় তারা হলেনঃ সোনাউল্লাহ সরকার, কাজী বহরউল্লাহ, হাজী জামালউদ্দিন, চাঁদ মহম্মদ, আছমত আলী, সাদত আলী আখন্দ, কবি কে. এম শমশের আলী, কে. এম মেছের, সৈয়দ আফতাব উদ্দিন, মওলবী আয়েন উদ্দিন, কবি একেএম রোস্তম আলী কর্ণপুরী, নাজিরুল ইসলাম মোহাম্মদ সুফিয়ান।
কাহালু থানার অধিবাসী কাজী বহরউল্লাহ গজলগীতি গ্রন্থ রচনা করেছিলেন যার নাম ছিলঃ ‘ফুলের ডালা’।
বগুড়ার ২জন স্বনামখ্যাত লেখক ভ্রাতৃদ্বয় ড. মুস্তফা নূরউল ইসলাম এবং ‘চরমপত্র’ খ্যাত এম. আর আখতার মুকুলের পিতা ছিলেন সাদত আলী আখন্দ। ১৯৭১ খৃস্টাব্দে অসুস্থতার কারণে মৃত্যুবরণ করেন।
বগুড়ায় এই সময় যে দু’জন কবি খ্যাতি অর্জন করেছিলেন তাঁরা হলেনঃ কবি রোস্তম আলী কর্ণপুরী এবং কবি কে. এম শমশের আলী।
উপমহাদেশের প্রখ্যাত ভাষা পন্ডিত, জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ আযিযুল হক কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন বগুড়ার সাহিত্যিক পরিবেশ সৃষ্টিতে ‘সাহিত্য আড্ডা’র প্রচলন করেছিলেন। মনি সান্যাল নামে এক সাহিত্যমোদীর বাসভবন স্যানাল বাড়ি’তে প্রতি রবিবার বসতো এই সাহিত্য আড্ডা। বগুড়া থাকাকালীন ড. শহীদুল্লাহ পাক্ষিক ‘তকবীর’ নামে একটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছিলেন।
আরও: বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
বগুড়া নামকরণের ইতিহাস
বগুড়া সম্পর্কে অনেক ইতিহাসতো জানা হল এবার চলুন বগুড়া জেলার নামকরণ কীভাবে হয়েছিল তা জানা যাক।
বগুড়া নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে অনেক ঘাঁটাঘাঁটি করে যা জানতে পারলাম তা হলঃ সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবনের পুত্র সুলতান নাসির উদ্দিন বগরা খান এর নাম অনুসারে বগরা বা বগুড়া নাম করন করা হয়।
তার মানে, বগুড়া জেলার আরেকটি নাম হল “বগরা”। সুলতান নাসির উদ্দিন বগরা ১২৭৯ থেকে ১২৮২ পর্যন্ত বগুড়া অঞ্চলের শাসক ছিলেন।
বগুড়া জেলা ভৌগলিক পরিচিতি
বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা হচ্ছে, প্রাচীন জনপদ উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার।
আপনি জানেন কি? প্রাচীন পুন্ড্র রাজ্যের রাজধানী পুন্ড্রবর্ধনই হচ্ছে এ বগুড়া জেলা। মৌর্য, পাল, গুপ্ত, সেন প্রভৃতি রাজাদের প্রশাসনিক কেন্দ্রস্থল ছিল এই বগুড়া জেলায়।
ভৌগলিক অবস্থান
৮৯.০০ ডিগ্রি পূর্ব থেকে ৮৯.৪০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ এবং ২৪.৩০ ডিগ্রি উত্তর থেকে ২৫.১০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে রাজশাহী বিভাগের বগুড়া জেলা অবস্থিত।
বগুড়া জেলার সীমানা
উত্তরে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা, দক্ষিণে নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলা, পূর্বে জামালপুর ও সিরাজগঞ্জ জেলা এবং পশ্চিমে জয়পুরহাট ও নওগাঁ জেলা হচ্ছে বগুড়া জেলার সীমানা।
বগুড়া উল্লেখযোগ্য নদী
বগুড়ায় প্রায় ১৮টি ছোট-বড় নদী রয়েছে।
প্রধান নদীসমূহ
বগুড়া জেলার প্রধান নদী সমূহ হচ্ছে-
- করতোয়া নদী
- যমুনা নদী
- বাঙ্গালী নদী
- নাগর নদী
ছোট-বড় নদী সমূহ
- করতোয়া নদী
- বাঙ্গালী নদী
- যমুনা নদী
- নাগর নদী
- হলহলিয়া নদী
- ইছামতি নদী
- মহিষাবান নদী
- সুখদহ নদী
- ডাকুরিয়া নদী
- বেলাই নদী
- ভাদাই/ভদ্রাবতী নদী
- চন্দ্রবতী নদী
- গাংনই নদী
- গজারিয়া নদী
- মানস/মোনাস নদী
- বানিয়াইয়ান নদী
- ইরামতি নদী
- ভেলকা নদী
সড়ক পথে বগুড়া জেলার দূরত্ব
ঢাকা | ২২৯ কিলোমিটার |
বরিশাল | ৪৩৮ কিলোমিটার |
চট্টগ্রাম | ৪৯২ কিলোমিটার |
কুমিল্লা | ৩২৫ কিলোমিটার |
ফরিদপুর | ৩৫৬ কিলোমিটার |
দিনাজপুর | ১৮৫ কিলোমিটার |
খুলনা | ৩৮১ কিলোমিটার |
কুষ্টিয়া | ২২৪ কিলোমিটার |
যশোর | ৩২০ কিলোমিটার |
ময়মনশিংহ | ৪৪২ কিলোমিটার |
পাবনা | ১৫৮ কিলোমিটার |
রাজশাহী | ২৬৪ কিলোমিটার |
রংপুর | ১০৬ কিলোমিটার |
সিলেট | ৫৭৫ কিলোমিটার |
রাঙ্গামাটি | ৫৬৮ কিলোমিটার |
বগুড়া জেলা কৃতী ব্যক্তিত্ব
এবার আপনাকে বগুড়া জেলার কৃতী ব্যক্তিত্বদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।
- মেজর জিয়াউর রহমান – প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট
- প্রফুল্ল চাকী – ব্রিটিশ বিরোধী আন্দলনের নেতা
- মোহাম্মদ আলী – কূটনীতিক এবং পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী
- খাদেমুল বাশার – বিমান বাহিনী প্রধান
- আখতারুজ্জামান ইলিয়াস – সাহিত্যিক ও গল্পকার
- রোমেনা আফাজ – সাহিত্যিক
- মনোজ দাশগুপ্ত – কবি ও লেখক
- মোঃ সাখাওয়াত হোসেন – কবি
- গাজিউল হক – ভাষা সৈনিক
- এম. আর. আখতার মুকুল – লেখক এবং সাংবাদিক
- ড.মাহফুজুর রহমান – চেয়ারম্যান, এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ
- লুতফর রহমান সরকার – সাবেক গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক
- মুশফিকুর রহিম – জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়
- শফিউল ইসলাম সুহাস – জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড়
- হিরো আলম – মিউজিক ভিডিও মডেল
- অপু বিশ্বাস – চলচ্চিত্র অভিনেত্রী
- তরুণ মজুমদার – চিত্রপরিচালক
বগুড়া জেলার উল্লেখযোগ্য পত্রপত্রিকা
১) দৈনিক করতোয়া
২) দৈনিক প্রভাতের আলো
৩) দৈনিক উত্তরের খবর
৪) দৈনিক সাতমাথা
৫) দৈনিক চাঁদনী বাজার
৬) দৈনিক আজ ও আগামীকাল
৭) দৈনিক মুক্ত সকাল
৮) দৈনিক বাংলা বুলেটিন
৯) দৈনিক সকালের আনন্দ
১০) দৈনিক উত্তর কোন
১১) দৈনিক কালের খবর
১২) দৈনিক মুক্ত বার্তা
১৩) দৈনিক সকলের খবর
১৪) দৈনিক বাংলাদেশ
১৫) দৈনিক দুর্জয় বাংলা
বগুড়া জেলার দর্শনীয় স্থান সমূহ
১। মানকালীর কুন্ড ধাপ
২। বিহার ধাপ
৩। পরশুরামের প্রাসাদ
৪। বেহুলা লক্ষিণদ্বরের বাসর ঘর (গোকুল মেধ)
৬। ভীমের জাঙ্গাল
৭। যোগীর ভবন
৮। ভাসু বিহার
৯। মহাস্থানগড়
১০। পাঁচপীর মাজার কাহালু
১১। সারিয়াকান্দির পানি বন্দর
১২। বাবুর পুকুরের গণকবর, শাজাহানপুর
১৩। জয়পীরের মাজার,দুপচাচিয়া
১৪। সান্তাহার সাইলো
১৫। দেওতা খানকা হ্ মাজার শরীফ,নন্দীগ্রাম
১৬। হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী মাহীসওয়ার (রহঃ) মাজার শরীফ
১৭। শীলাদেবীর ঘাট
১৮। জিউৎকুন্ড
১৯। মহাস্থান প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর
২০। গবিন্দ ভিটা
(বিঃদ্রঃ উপরে দেয়া পরিসংখ্যান এর তথ্য সমূহ bangladesh.gov.bd থেকে নেয়া।)
ফেসবুক: Kuhudak
বগুড়া জেলা, সারিয়াকান্দি থানা, ধারাবর্ষা ফরেস্ট বন লিষ্টে নেই । যমুনা নদীর পূর্ব পাশে আছে।
আপনার তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।