বিরিশিরি (Birishiri) বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। বিজয়পুরে আকর্ষনীয় চীনামাটির পাহাড় ও নীল পানির হ্রদের জন্য বিখ্যাত।
আজকের পোস্টে আমরা দুর্গাপুরের বিরিশিরি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
বিরিশিরি ভ্রমণ
ভ্রমণ স্থান | বিরিশিরি |
অবস্থান | দুর্গাপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | প্রায় ১৬৬ কিলোমিটার |
নেত্রকোণা থেকে দূরত্ব | প্রায় ৫৫ কিলোমিটার |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
বিরিশিরি শত বছরের পুরনো ইংরেজ শাসন আমলে স্থাপিত বয়েজ ও গালর্স হাই স্কুল, সরকারী কালচারাল একাডেমী, সোমেশ্বরী নদী, সাগর দিঘী, দুর্গাপুর রাজবাড়ী, পুরাকীর্তি নিদর্শন মঠগড় সহ মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারনে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়।
এখানে ৬০ ভাগ গারো আদিবাসী রয়েছে পাশাপাশি ৩০ ভাগ মুসলিম, বাকি ১০ ভাগ হিন্দু ও অন্যান্য জনগোষ্ঠী বসবাস করে। বিজয়পুরের চীনামাটির পাহাড় এবং সমভূমি দৈর্ঘ্যে প্রায় ১৬ কিলোমিটার ও প্রস্থে ৬০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
আরও: আহসান মঞ্জিল
বিরিশিরিতে কি রয়েছে
বিরিশিরি একটি গ্রাম আর এখানে রয়েছে বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান। চীনামাটির পাহাড়, নীল জলের হ্রদ এছাড়াও সোমেশ্বরী নদী, রানীখং গির্জা এবং কমলা রানীর দীঘি সহ অনেক দর্শনীয় স্থান।
এখানে দারুন একটি আকর্ষণ হল, সোমেশ্বরী নদীর তীরে কাশবন আর দূরের গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখা। ভ্রমণে আপনি আরও দেখতে পাবেন পাহাড়ী কালচারাল একাডেমী, গারো, হাজং ইত্যাদি নৃগোষ্ঠী, হাজং ভাষায় টুঙ্কা বিপ্লব বা তেভাগা আন্দোলনের বেশকিছু স্মৃতিস্তম্ভ এবং সেন্ট যোসেফের গির্জা।
নদী ভ্রমণের ইচ্ছে থাকলে বর্ষাযকালে সোমেশ্বরীতে যেতে পারেন। কারন, বর্ষাযকালে সোমেশ্বরী নদী তার সমস্ত রুপ মেলে ধরে, তখন বিরিশিরির সৌন্দর্য্য দেখতে প্রচুর পর্যটক এসেন।
আরও: তিস্তা ব্যারেজ
যাওয়ার উপায়
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে বিরিশিরি ভ্রমণে আসতে পারেন।
বাস ভ্রমণ
রাজধানী ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে সরকার এবং জিন্নাত পরিবহণে বাস দুর্গাপুর যায়। তবে এখানে উল্লেখ্য যে, সাধারণত এই বাসগুলো অনেক সময় দুর্গাপুর না গিয়ে সুখনগরী পর্যন্ত যায়।
যদি আপনি সুখনগরী নেমে যান তাহলে এখান থেকে নৌকায় করে নদী পার হয়ে রিকশা, বাস বা মোটর সাইকেলে করে দূর্গাপুর যেতে হবে।
ভাড়া: দুর্গাপুর যেতে জনপ্রতি ২৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা নিতে পারে আর যদি সুখনগরী পর্যন্ত যায় তাহলে সুখনগরী থেকে বাসে ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা, রিক্সায় ৮০ টাকা থেকে ১২০ টাকা আর মোটর সাইকেলে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা নিতে পারে।
ট্রেন ভ্রমণ
আপনি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাত ১১:৫০ মিনিটে হাওড় এক্সপ্রেসে করে শ্যামগঞ্জ ট্রেন স্টেশনে নামবেন। ট্রেন স্টেশন থেকে বাস বা CNG ভাড়া করে যেতে পারবেন।
চট্টগ্রাম থেকে
আপনি যদি চট্টগ্রাম থেকে ভ্রমণে আসেন তাহলে, চট্টগ্রামের অলংকার মোড় থেকে বাসে চড়ে বিরিশিরির যেতে পারবেন।
ভাড়া: চট্টগ্রাম থেকে ভাড়া নিতে পারে ৪৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা।
নোট: দুর্গাপুর ভ্রমণ শেষে ঢাকা ফেরার সময় দুর্গাপুরের তালুকদার প্লাজার সামনে থেকে রাত ১১ টা এবং ১১:৩০ মিনিটে ২টি নাইট কোচ ঢাকার মহাখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
কোথায় খাবেন
ভ্রমণের সময় খাবারের জন্য তেমন কিছু পাবেন না এখানে। তাই, সাথে খাবার পানি সহ হালকা খাবার রাখতে পারেন। তবে বিরিশিরি বাজারে খাবারের হোটেল পাবেন। এখানে ভাত, ডাল, মাছ, মাংসের পাশাপাশি বকের মাংসও পাওয়া যায়।
নেত্রকোণা জেলা বালিশ মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। ভ্রমণে গেলে দূর্গাপুর বাজারে নেত্রকোণার বিখ্যাত বালিশ মিষ্টি খেতে ভুলবেন না।
কোথায় থাকবেন
এই দর্শনীয় স্থান টি একদিনের ভ্রমণের জন্য তারপরও যদি থকতে হয়ে তাহলে এখানে থাকার জন্য জেলা পরিষদ ডাক বাংলো সহ বেশ কিছু গেস্ট হাউস এবং মধ্যম মানের আবাসিক হোটেল পাবেন। আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোন হোটেলে থেকে যেতে পারেন।
ফেসবুক: Kuhudak