আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ী (Atharabari Zamidar Bari) বাংলাদেশের ময়মনসিংহ বিভাগের ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো দৃষ্টিনন্দন এই জমিদার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত।
আজকের পোস্টে আমরা ময়মনসিংহ জেলার আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
আরও: ভাটপাড়া নীলকুঠি
আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ী ভ্রমণ
ভ্রমণ স্থান | আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ী |
অবস্থান | আঠারবাড়ী, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ |
সৃষ্টিকারী | দ্বীপ রায় চৌধুরী |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | ১৩৮ কিলোমিটার (প্রায়) |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
আঠারবাড়ী কিন্তু একটি গ্রামের নাম। এই গ্রামের নামকরণ করা হয়েছে, এই ঐতিহ্যবাহী আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ির নাম অনুসারে। এখানে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর এসেছিলেন।
ইতিহাস
প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো এই জমিদার বাড়ি পূর্বে আঠারবাড়ি গ্রাম শিবগঞ্জ/গোবিন্দ বাজার নামে সবার কাছে পরিচিত ছিল। আঠারবাড়ী জমিদার বাড়ি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রায় ২৫০ শতকের দিকে।
দ্বীপ রায় চৌধুরী মূলত যশোর জেলার বাসিন্দা ছিলেন। পরবর্তীতে জমিদার দীপ রায় চৌধরী নিজ ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শীবগঞ্জে এসে পুত্রের নামে জমিদারি কিনে এই এলাকার নাম পরিবর্তন করে রাখেন রায় বাজার।
এরপর দ্বীপ রায় চৌধুরী আসার সময় তার জমিদার বাড়ির কাজকর্ম করার জন্য ১৮টি হিন্দু পরিবার এখানে নিয়ে আসেন এবং তাদেরকে প্রত্যেকে বাড়ি করে দেন। আর এই শীবগঞ্জের বর্তমান নামই আঠারবাড়ী।
আঠারবাড়ী ডিগ্রি কলেজ ১৯৬৮ সালে আঠারবাড়ি জমিদার বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করা হয়। আপনি এখানে ভ্রমণে গেলে প্রধান ফটক দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই দেখা পাবেন বিশাল খেলার মাঠ ও জমিদার বাড়ীর অন্দরমহল। এখানে দরবার হল, কাছারি বাড়ি ও ঐতিহ্যবাহী রাণীপুকুর রয়েছে।
আরও: আহসান মঞ্জিল
রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগম
১৯২৬ সালের ১৯শে ফেব্রুয়ারি জমিদার প্রমোদ রায় চৌধুরীর আমন্ত্রণে কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই জমিদার বাড়িটিতে ভ্রমণে আসেন। জমিদার প্রমোদ রায় চৌধুরী রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্য মধ্যাহ্নভোজ, গান, নাটক ও বিনোদনের আয়োজন করেছিলেন।
কিভাবে যাবেন
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে ভ্রমণে আসেন না কেনো আপনাকে প্রথমে ময়মনসিংহ জেলা শহরে আসতে হবে।
ঢাকা থেকে এখানে ভ্রমণে আসতে চাইলে, ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে এনা, শামীম এন্টারপ্রাইজ, সৌখিনসহ বেশ কিছু বাস ময়মনসিংহ যায়। এগুলো চড়ে চলে আসতে পারেন অথবা ঢাকা – নেত্রকোণা রুটের গাড়িতে চড়ে ময়মনসিংহ যেতে পারেন। বাসে ময়মনসিংহ যেতে সময় লাগে ২.৫ ঘন্টা থেকে ৩ ঘণ্টা।
আপনি চাইলে ট্রেনে যেতে পারেন। ট্রেনে যেতে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে তিস্তা এক্সপ্রেস, মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ও হাওর এক্সপ্রেস ট্রেনে করে ময়মনসিংহ যেতে পারবেন।
আবার ময়মনসিংহ রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ভৈরবগামী ট্রেনে উঠে আঠারবাড়ী রেলওয়ে ষ্টেশনে নেমে রিকশায় বা পায়ে হেঁটে জমিদার বাড়ি যেতে পারেন।
ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ জেলাগামী বাসে চড়ে ঈশ্বরগঞ্জ পৌঁছে সেখান থেকে ইজিবাইক কিংবা CNG চড়ে আঠারবাড়ী যেতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
ময়মনসিংহ জেলার বিখ্যাত খাবার হচ্ছে মুক্তা গাছার মন্ডা। তাই এখানে ভ্রমণে গেলে মুক্তা গাছার মন্ডা খেয়ে আসার চেষ্টা করবেন। আর জমিদার বাড়ি ভ্রমণে গিয়ে খাওয়ার জন্য আপনাকে ময়মনসিংহ শহরে যেতে হবে। শহরে হোটেল রসনা বিলাস, কৃষ্ণা কেবিন, খন্দকার রেস্তোরা, ময়মনসিংহ বিরিয়ানি হাউজ, সারিন্দা রেস্টুরেন্ট ও আভাস্তি রেস্টুরেন্ট সহ বেশ কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
জমিদার বাড়ি একদিনের ভ্রমণের জন্য ভালও জায়গা তবে আপনি যদি থাকতে চান তাহলে, ময়মনসিংহ শহরের হোটেল আমির ইন্টারন্যাশনাল, সিলভার ক্যাসেল, হোটেল হেরা, হোটেল লা ম্যারিয়ান, নাজমা বোর্ডিং, নিরালা রেস্ট হাউজ, ঈশাঁ খা ইত্যাদি হোটেলে থাকতে পারেন।
ফেসবুক: Kuhudak