নিঝুম দ্বীপ (Nijhum Dwip) বা নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী (Noakhali) জেলার হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত বঙ্গপসাগরের ছোট্ট একটি দ্বীপ। প্রায় ১৪,০৫০ একর আয়তনের দ্বীপটিকে ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে।
আজকের পোস্টে আমরা নোয়াখালী জেলার হাতিয়া (Hatiya) উপজেলার নিঝুম দ্বীপ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
%27%20fill-opacity%3D%27.5%27%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23242619%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-2444.5021%20725.88534%20-155.62436%20-524.08288%201244.6%201667.6)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23b8bba9%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(-15.3%201966%20-2007)%20scale(1270.40776%20629.93339)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23e2ecaf%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(386.61103%2099.26484%20-39.08288%20152.21778%20245.6%20682)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%238c9f2d%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-1614.03%2067.6479%20-8.1536%20-194.53886%201653.2%20914.8)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
আরও: ড্রিম ওয়ার্ল্ড পার্ক
নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যান
ভ্রমণ স্থান | নিঝুম দ্বীপ |
ধরন | দ্বীপ, জাতীয় উদ্যান |
অবস্থান | হাতিয়া, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম |
আয়তন | ১৬৩.৪৫ বর্গকিমি (৬৩.১১ বর্গমাইল) |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | প্রায় ২০৪ কিলোমিটার |
নোয়াখালী থেকে দূরত্ব | প্রায় ৯১ কিলোমিটার |
টেলিযোগাযোগ | টেলিটক, রবি ও গ্রামীণফোন |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
নিঝুম দ্বীপের সবচেয়ে আকর্ষন হচ্ছে চিত্রা হরিণ ও শীতকালের অতিথি পাখি। আপনি একসঙ্গে অনেক চিত্রা হরিণ দেখতে পাবেন যা বাংলাদেশের আর কোথাও তেমন একটা দেখা যায় না। আর এখানে সন্ধ্যা নামলেই শিয়ালের ডাক শিরদাঁড়া দিয়ে রোমাঞ্চের ঢেউ তোলে।
%27%20fill-opacity%3D%27.5%27%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%2324290f%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(-91.2%201468.2%2075.3)%20scale(421.60713%202445.10073)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23fffdff%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-65.7464%20-491.83957%202391.62347%20-319.69905%201013.4%20275.3)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23d3c0ff%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(13.85315%20495.95061%20-2361.87244%2065.97307%20914.1%20398.4)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%236e7161%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(87%20271%201415.2)%20scale(179.74342%202308.91735)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
আরও: প্রতাপপুর জমিদার বাড়ি
ইতিহাস ও অবস্থান
নিঝুম দ্বীপ মোট ৪টি চর বাল্লারচর, চর ওসমান, কামলার চর ও মৌলভির চর মিলে গঠিত। ধারণা করা হয়, ১৬৩.৪৫ বর্গকিমি (৬৩.১১ বর্গমাইল) বা প্রায় ১৪,০৫০ একরের দ্বীপটি ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে জেগে উঠেছিল।
%27%20fill-opacity%3D%27.5%27%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23e6e3f8%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(24.54233%20336.29548%20-2543.23654%20185.60152%201294.2%20199)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%234a4b47%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-2224.097%20-197.51895%2039.0684%20-439.91678%201268.7%201505.6)%22%2F%3E%3Cpath%20fill%3D%22%2380807c%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20d%3D%22M1125%201855l850-1480-820-60z%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23d0d1c9%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(106.3%20952.9%201004.8)%20scale(266.04095%201981.51061)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকাময় তাই এখানকার জেলেরা এটাকে বালুর চর নাম দিয়েছে। বর্তমানে এই দ্বীপের নাম নিঝুমদ্বীপ হলেও স্থানীয় লোকজন এখনও এই দ্বীপকে বাইল্যার ডেইল বা বাল্লারচর বলেই সম্বোধন করে থাকে।
বাংলাদেশের বনবিভাগ প্রথম পরীক্ষামূলক ভাবে এখানে ৪ জোড়া হরিণ ছাড়েছিল। তারপর থেকে এখন এখানে হরিণের অভয়ারণ্য গড়ে উঠেছে। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে হরিণশুমারি করা হয়েছিল। তখন হরিণের সংখ্যা ছিল প্রায় ২২,০০০। তবে বর্তমানে এই দ্বীপে প্রায় ৪০ হাজার হরিণ রয়েছে।
এখানে নোনা পানিতে বেষ্টিত কেওড়া গাছের অভয়ারণ্য রয়েছে। সুন্দরবনের পরে ম্যানগ্রোভ বনের মধ্যে নিঝুম দ্বীপকে বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন হিসেবে অনেকে দাবি করে থাকেন।
%27%20fill-opacity%3D%27.5%27%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23414531%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(-92.6%20783.3%20-182.8)%20scale(291.51864%201637.72459)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%2394a34c%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(2455.73088%20-686.93946%20139.80093%20499.77252%202016.7%201312)%22%2F%3E%3Cpath%20fill%3D%22%239f99c2%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20d%3D%22M2730-227.3l31.3%20298.4L1180%20237.3l-31.3-298.4z%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%236f6b83%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-255.58998%20-577.84963%20338.37138%20-149.6658%20362.6%20474.2)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
দ্বীপটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায় অবস্থিত। আপনি এখানে শীতকালে ভ্রমণে গেলে ভূতিহাঁস, সরালি, লেনজা, পিয়ং, রাঙ্গামুড়ি, চখাচখি, রাজহাঁস, কাদাখোঁচা, বাটান, জিরিয়া, গুলিন্দা, গাংচিল, কাস্তেচরা, পেলিক্যান, জিরিয়া সহ হাজারো অতিথি পাখির দেখা পাবেন।
এছাড়া এই দ্বীপে রয়েছে হরিণ, বন্য শূকর, শেয়াল, বানর সহ নানা প্রজাতির সাপ।
আরও: ইনানী সমুদ্র সৈকত
দ্বীপের নামকরণ
বাংলাদেশ সরকার ৮ এপ্রিল ২০০১ সালে পুরো দ্বীপটিকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করেছে। নিঝুম দ্বীপের পূর্বের নাম ছিলো চর-ওসমান বা বাউল্লার চর আবার কেউ এই দ্বীপকে ইছামতীর চরও বলে থাকত।
%22%20transform%3D%22matrix(10%200%200%2010%205%205)%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23aea394%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(2.77364%2031.72298%20-121.47954%2010.62132%20136%2089.2)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23005098%22%20cx%3D%22115%22%20cy%3D%2221%22%20rx%3D%22255%22%20ry%3D%2238%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%236a5440%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(178%2068.9%2079)%20scale(224.90912%2053.3183)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%2397b0c3%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(84%2019.1%2098.1)%20scale(29.4908%2056.26904)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
নামকরণের এই কারন হচ্ছে, এই চরে প্রচুর ইছা মাছ (চিংড়ীর স্থানীয় নাম) পাওয়া যেত তাই একে ইছামতির চরও বলা হয়ে থাকত। জানা যায় যে, নিঝুম দ্বীপে প্রথম বসত গড়েন ওসমান নামের একজন বাথানিয়া। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো। পরবর্তীতে আমিরুল ইসলাম কালাম হাতিয়ার সাংসদ এই দ্বীপের নাম পরিবর্তন করে নিঝুম দ্বীপ রাখেন।
আরও: গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত
কি আছে নিঝুম দ্বীপে
নিঝুমদ্বীপে ভ্রমণের প্রধান আকর্ষন হচ্ছে চিত্রা হরিণ ও শীতকালে আসা অতিথি পাখি। আপনি এখানে ভ্রমণে গেলে প্রচুর হরিণের দেখা পাবেন। আর শীতকালে প্রায় ৩৫ প্রজাতির বিভিন্ন পাখির দেখা পাবেন।
%27%20fill-opacity%3D%27.5%27%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23aca388%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(821.4967%20155.12478%20-93.77538%20496.6077%20368%20153.7)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%233f0000%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(27.5075%20275.61915%20-2230.9079%20222.65038%201546.6%201032)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23618391%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(2273.81408%2066.85018%20-7.02618%20238.98543%201826.4%20144.2)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23a65d18%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-1988.00075%20-15.74982%202.17183%20-274.1363%201012.5%20616.8)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
ভ্রমণে গিয়ে হরিণের দেখা পেতে চাইলে বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কবিরাজের চরের কাছে চৌধুরীর খাল দিয়ে কিছুক্ষণ হাঁটলেই হরিণের দেখা পাবেন। আর আপনি যদি ট্রলার রিজার্ভ নেন তাহলে মাঝি আপনাকে হরিণ দেখিয়ে আনবে।
ভ্রমণে গিয়ে আপনি নামা বাজার সি বীচ থেকে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে পারেন। আবার পাখির দেখা পেতে চাইলে দমার চরের দক্ষিণ দিকে নতুন সী বিচ ভার্জিন আইল্যান্ডে যেতে পারেন। এই আইল্যান্ডে নাম না জানা অনেক পাখির দেখা পাবেন।
এছাড়া আপনার হাতে যদি সময় থাকে তাহলে ট্রলার রিজার্ভ করে ভোলার ঢালচর, চর কুকরি-মুকরিতে একটি দিন ঘুরে আসতে পারেন।
%22%20transform%3D%22matrix(10%200%200%2010%205%205)%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%239ac6fc%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-100.54197%2016.46438%20-13.04056%20-79.63395%2093.6%2019.6)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%231e1000%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(223.4626%20-122.83918%2026.78928%2048.73365%20208.3%20134.4)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23231f18%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(249.63693%2012.11196%20-1.57308%2032.42244%20145.8%20169)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23948475%22%20cx%3D%2285%22%20cy%3D%2299%22%20rx%3D%22122%22%20ry%3D%2239%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
আরও: তারুয়া সমুদ্র সৈকত
ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
নিঝুমদ্বীপ ভ্রমণের সেরা সময় বা উপযুক্ত সময় হচ্ছে শীতকাল ও বসন্তকাল। আপনি অক্টোবর থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় দ্বীপ ভ্রমণে গেলে সচেয়ে বেশি উপভোগ করতে পারবেন। আর এই সময়টাকে ভ্রমণের আদর্শ সময় বলা হয়ে থাকে।
এই সবময় রাস্তা শুকনো থাকে তাই চাইলেই বনের ভিতরে হেটে হরিণ দেখতে পারবেন। আর তাছাড়া দ্বীপের সৌন্দর্য আপাদমস্তক অবগাহন করতে পারবেন।
এছাড়া আপনি চাইলে অন্য যে কোন সময় এখানে ভ্রমণে যেতে পারেন তবে এ সময় মেঘনা নদী ও সাগর বেশ উত্তাল থাকে তাই ভ্রমণের সময় আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।
আরও: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত
দর্শনীয় স্থান সমূহ
নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণে গেলে আপনি যে দর্শনীয় স্থান গুলো ভ্রমণ করতে পারবেন উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল।
%27%20fill-opacity%3D%27.5%27%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%237f573c%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(-2517.00607%20-79.1001%2017.00947%20-541.25021%20986%201424.9)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%2332b1ff%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(2474.77499%20-9.69065%202.04914%20523.30315%201210%20274.9)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%23a9b5dc%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22matrix(1.71734%20285.03139%20-2258.34324%2013.60676%201943.1%20673.4)%22%2F%3E%3Cellipse%20fill%3D%22%230084fb%22%20fill-opacity%3D%22.5%22%20rx%3D%221%22%20ry%3D%221%22%20transform%3D%22rotate(-91.3%20492.5%20-337)%20scale(253.99935%202136.84144)%22%2F%3E%3C%2Fg%3E%3C%2Fsvg%3E)
কমলার দ্বীপ
ভ্রমণে আপনি কমলার দ্বীপ বা খালে প্রচুর ইলিশ মাছের দেখা পাবেন। কমলার দ্বীপের আশে পাশের দ্বীপগুলোও বেশ সুন্দর। আপনি যদি পুরো দ্বীপটি ভ্রমণ করতে পারেন তাহলে আপনার মন ভরে যাবে।
এই দ্বীপের নামকরণের মজার বিষয় হলো: ঘূর্ণিঝড়ের পরে জাহাজ থেকে এই দ্বীপে কয়েক বাক্স কমলা পড়ে থাকতে দেখে এই দ্বীপের নামকরণ করা হয় কমলার দ্বীপ!
ম্যানগ্রোভ বন
ম্যানগ্রোভ বন হচ্ছে নিঝুম দ্বীপের বনায়ন প্রকল্প। ম্যানগ্রোভ বনে রয়েছে কেওড়া গাছ, গেউয়া গাছ, লতাগুল্ম সহ নানা প্রজাতির গাছ।
দমার চর
সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে আরও একটি সমুদ্র সৈকত জেগে উঠেছে। এই সৈকতটি একেবারে আনকোরা বা কুমারী। তাই এটাকে এখন ডাকা হচ্ছে কুমারী সমুদ্র সৈকত বলে! এছাড়া স্থানীয় লোকজন এই সৈকতকে দেইলা বা বালুর স্তুপ বলে ডাকে।
চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চর
চৌধুরী খাল ও কবিরাজের চরে আপনি প্রচুর হরিণের দেখা পাবেন। তবে এখানে বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে যেতে হবে। এছাড়া সন্ধ্যার সময় কবিরাজের চরে নেমে সূর্যাস্ত ও হাজার হাজার মহিষের পাল দেখতে পাবেন।
চোয়াখালি ও চোয়াখালি সী বিচ
আপনি খুব সকালে চোয়াখালি ও চোয়াখালি সী বিচে গেলে হরিন দেখতে পাবেন। এছাড়া আপনার ভাগ্য ভালো হলে সকাল ৫ টার দিকে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ করতে করতে নিঝুম রিসোর্ট এর বারান্দা থেকেও হরিনের দেখা পেতে পারেন।
আরও: বাংলাদেশের সকল দর্শনীয় স্থান বা পর্যটন কেন্দ্র
কিভাবে যাবেন
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে এই দ্বীপে ভ্রমণে যেতে পারবেন।
বাস ভ্রমণ
আপনি বাসে করে দ্বীপে ভ্রমণে যেতে পারবেন। রাজধানী ঢাকার সায়দাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে একুশে এক্সপ্রেস, মুনলাইন এন্টারপ্রাইজ, হিমাচল এক্সপ্রেসের নন-এসি ও এসি বাসে নোয়াখালীর সোনাপুর যেতে পারবেন। এছাড়া ধানমন্ডি জিগাতলা কাউন্টার থেকে একুশে পরিবহনের বাস নোয়াখালীর সোনাপুরের উদ্দেশ্য রাত ১০:২০ মিনিটে ছাড়ে যায়।
ভাড়া: বাসে নোয়াখালীর সোনাপুর যেতে ভাড়া নিতে পারে ৫৫০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত।
নোয়াখালীর সোনাপুরে নেমে CNG বা স্থানীয় যানবাহনে করে চেয়ারম্যান ঘাট যাবেন। চেয়ারম্যান ঘাট থেকে হাতিয়া যাওয়ার বিভিন্ন সি-ট্রাক, ট্রলার ও স্পীড বোট পাবেন। চেয়ারম্যান ঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৮ টায় সি-ট্রাক ছাড়ে, আর নলচিরা থেকে চেয়ারম্যান ঘাট আসার ফিরতি সী ট্রাক ছাড়ে সকাল ১০ টায়।
ভাড়া: চেয়ারম্যান ঘাট থেকে হাতিয়া যেতে জনপ্রতি ১০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা ভাড়া নিতে পারে।
হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে নেমে মোটর সাইকেল রিজার্ভ করবেন। রিজার্ভ করার পূর্বে অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন। মোটরসাইকেল করে নলচিরা ঘাট থেকে মোক্তারিয়া ঘাট যাবেন।
ভাড়া: মোটর সাইকেল রিজার্ভ ভাড়া ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা নিতে পারে।
এরপর মোক্তারিয়া ঘাট থেকে ট্রলারে চড়ে নিঝুম দ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে আসবেন।
ভাড়া: ট্রলার ভাড়া ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা নিতে পারে।
বন্দরটিলা ঘাট থেকে আবার মোটরসাইকেল চড়ে নামার বাজার আসতে হবে।
ভাড়া: মোটরসাইকেলে দুই জনের ভাড়া ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা নিতে পারে।
ট্রেন ভ্রমণ
আপনি চাইলে ট্রেনে ভ্রমণে যেতে পারেন। ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য ৬ দিন বিকাল ৩:১০ মিনিটে উপকুল এক্সপ্রেস নামক আন্তঃনগর ট্রেন নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। আপনি ট্রেনে চড়ে নোয়াখালীর মাইজদি গিয়ে নামবেন।
ভাড়া: ট্রেনে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর মাইজদি ভাড়া নিতে পারে ৩১৫ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা। সময় লাগে প্রায় ৬ ঘন্টা।
এরপর মাইজদি থেকে CNG রিজার্ভ করে চেয়ারম্যান ঘাট চলে আসবেন। ভাড়া নিবে ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা। এছাড়া স্থানীয় অন্যান্য পরিবহণে আসলে ভাড়া ১২০ টাকা থেকে ২০০ টাকা নিতে পারে। চেয়ারম্যান ঘাট থেকে উপরোক্ত উপায়ে নিঝুমদ্বীপ চলে যেতে পারবেন।
লঞ্চ ভ্রমণ
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ তাই আপনি চাইলে লঞ্চে করে ভ্রমণে যেতে পারেন। লঞ্চে ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে হাতিয়ায় উদ্দেশ্যে প্রতিদিন বিকাল ৫:৩০ মিনিটে একটি মাত্র লঞ্চ ছেড়ে যায়।
আপনি লঞ্চে করে ভ্রমণে গেলে পরদিন হাতিয়ার তমুরদ্দী ঘাটে সকাল ৮ টা থেকে ৯ টার মধ্যে পৌঁছে যাবেন। তমুরদ্দী ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে লঞ্চ দুপুর ১২:৩০ মিনিটে ছাড়ে যায়।
ভাড়া: লঞ্চে ডেক ৪০০ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ১২০০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ২২০০ টাকা থেকে ২৬০০ টাকা নিতে পারে।
লঞ্চ থেকে নেমে মোটরসাইকেলে করে মোক্তারিয়া ঘাটে আসতে হবে। মোক্তারিয়া ঘাটে আসতে মোটরসাইকেলে ভাড়া নিতে পারে ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত।
মোক্তারিয়া ঘাট থেকে নিঝুমদ্বীপের বন্দরটিলা ঘাটে ট্রলারে করে যেতে হবে। আর বন্দরটিলা ঘাট থেকে মোটরসাইকেলে করে নামার বাজার যেতে দুইজনের ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা লাগতে পারে।
চট্টগ্রাম থেকে নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণ
আপনি যদি চট্টগ্রাম থেকে ভ্রমণে আসতে চান তাহলে চট্টগ্রাম থেকে বাসে বাধন পরিবহনে নোয়াখালীর সোনাপুর যেতে পারবেন। ভাড়া নিবে ২০০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা।
সোনাপুর থেকে CNG করে চেয়ারম্যান ঘাট যাবেন। এরপর উপরোক্ত উপায়ে নিঝুম দ্বীপ চলে যেতে পারবেন।
এছাড়া নৌপথে যেতে চাইলে চট্টগ্রাম সদরঘাট থেকে হাতিয়া যাওয়ার জাহাজ রয়েছে। সকাল ৮ টার দিকে জাহাজ হাতিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। জাহাজের ভাড়া ২০০ টাকা নিতে পারে। তবে মনে রাখবেন যে, জাহাজে যেতে সময়টা একটু বেশি লাগবে।
জাহাজ থেকে হাতিয়া নেমে মক্তারিয়া ঘাটে চলে যাবেন। খেয়া পার হলেই নিঝুম দ্বীপ।
কোথায় খাবেন
নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণে গিয়ে দ্বীপে তেমন ভালো খাবার পাবেন না। তবে সামুদ্রিক মাছ, মোটা চালের ভাত, মাংস, রুটি ইত্যাদি খেতে পারেন। আর ভ্রমণে অবশ্যই সাথে খাবার পানি নিয়ে নিবেন।
চাইলে হোটেল আসিফ থেকে খেয়ে নিতে পারেন। এই হোটেলের মান মোটামোটি ভালো। তবে, নামার বাজারে বেশ কিছু খাবার হোটেল পাবেন, যেখানে সামুদ্রিক মাছ এবং চিংড়ী ভাজা খেতে বেশ ভালো লাগবে আপনার।
নিঝুম দ্বীপে আপনি ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকায় ডাব পাবেন। বার বি কিউ করতে চাইলে নিঝুম রিসোর্ট এর ম্যানেজার কে বললেই ব্যবস্থা করে দিবে।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
আপনি নিঝুম দ্বীপে ভ্রমণে গিয়ে থাকার জন্য নামার বাজার সী বীচের কাছে অবস্থিত অবকাশ পর্যটনের নিঝুম রির্সোটে থাকতে পারেন।
ভাড়া: নিঝুম রিসোর্টে বিভিন্ন ক্যাটাগরির রুম পাওয়া যায়। আপনি ১৫০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকার মধ্যে থাকার রুম পেয়ে যাবেন। আর আপনি যদি অফ সিজনে (এপ্রিল ১৫ থেকে সেপ্টেম্বর ৩০ পর্যন্ত) ভ্রমণে যান তাহলে ৫০% পর্যন্ত ডিসকাউন্ট পেয়ে যেতে পারেন।
এছাড়া নিঝুম দ্বীপে থাকার জন্য কম এবং বেশি দামের অনেক হোটেল রুম পাবেন। আপনার পছন্দ মত যে কোন হোটেলে থেকে যেতে পারেন।
ভ্রমণ টিপস
নিঝুম দ্বীপ ভ্রমণে গেলে যে সব পরামর্শ গুলো আপনার প্রয়োজন হতে পারে।
- ভ্রমণের পূর্বে আপনার প্রয়োজনীয় জামাকাপড়, ক্যামেরা, চার্জার, ব্রাশ ইত্যাদি ব্যাগে ঘুছিয়ে নিন।
- একা একা হেঁটে বীচ এর অনেক দূরে চলে যাবেন না।
- ঢাকা থেকে গেলে বেশ লম্বা জার্নি হবে। তাই শারীরিক এবং মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
- অফসিজনে (এপ্রিল ১৫ থেকে সেপ্টেম্বর ৩০ পর্যন্ত) যেতে পারেন এতে ভ্রমণের খরচ কম হবে।
- মনে রাখবেন, চেয়ারম্যান ঘাট বা নলচিরা থেকে গমনকারী সি-ট্রাকগুলো জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করে যাত্রা করে এবং এখান থেকে প্রতি ২ ঘন্টা পরপর ট্রলার ছাড়ে, আর বিকাল ৫ টার পর ট্রলার চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
- আপনি যদি ক্যাম্পিং করতে চান তাহলে প্রয়োজনীয় সবই নামার বাজারে পাবেন।
- দ্বীপে প্রায় সকল অপারেটরের নেটওয়ার্ক পাওয়া গেলেও নিঝুম দ্বীপে শুধুমাত্র রবি, এয়ারটেল ও গ্রামীণফোনের ৪ জি সুবিধা পাওয়া যায়।
- স্থানীয় মানুষের সাথে ভালো ব্যাবহার করুন।
- অতিরিক্ত ছবি তোলা এবং ভিডিও করতে গিয়ে আসল সৌন্দর্য দেখতে ভুলবেন না।
ভ্রমণ জিজ্ঞাসা
দ্বীপ ভ্রমণে সাধারণ কিছু প্রশ্ন-উত্তর বা ভ্রমণ জিজ্ঞাসা।
নিঝুম দ্বীপ কোথায় অবস্থিত?
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত।
নিঝুম দ্বীপের অপর নাম কি?
নিঝুম দ্বীপের পূর্ব নাম ছিলো চর-ওসমান। ওসমান নামের একজন বাথানিয়া তার মহিষের বাথান নিয়ে প্রথম নিঝুম দ্বীপে বসত গড়েন। তখন এই নামেই এর নামকরণ হয়েছিলো।
নিঝুম দ্বীপের আয়তন কত?
দ্বীপের আয়তন ১৬৩.৪৫ বর্গকিমি (৬৩.১১ বর্গমাইল)
নিঝুম দ্বীপ কোথায় অবস্থিত কোন নদীর মোহনায়?
এটি মেঘনা নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের বুকে জেগে উঠা একটি চর। মূল ভূখণ্ডের হাতিয়া উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত।
ফেসবুক: Kuhudak