শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ (Sheikh Mahmud Shah Mosque) বা শাহ মাহমুদ মসজিদ অথবা শাহ মোহাম্মদ মসজিদ ১৬৮০ সালে নির্মিত বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলায় অবস্থিত একটি প্রাচীন মসজিদ। মসজিদ টি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটি একটি ১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ।
আজকের পোস্টে আমরা প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো শাহ মোহাম্মদ মসজিদ নিয়ে জানার চেষ্টা করব। চলুন শুরু করা যাক…
আরও: পাগলা মসজিদ
শাহ মোহাম্মদ মসজিদ ভ্রমণ
ভ্রমণ স্থান | শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ |
ধরন | ইসলামিক স্থাপত্য, মুঘল স্থাপত্য |
অবস্থান | এগারসিন্দুর, পাকুন্দিয়া, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা |
মালিকানা | বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর |
ধারণক্ষমতা | ১০০ |
দৈর্ঘ্য | ৩২ ফুট |
প্রস্থ | ৩২ ফুট |
গম্বুজ | ১টি |
মিনার | ৪টি |
ঢাকা থেকে দূরত্ব | ৭৭ কিলোমিটার (প্রায়) |
ড্রোন উড়ানো যাবে | হ্যাঁ |
১৬৮০ সালে নির্মিত প্রাচীন মোঘল স্থাপত্য এই মসজিদটির মূল নাম শাহ মাহমুদ মসজিদ, কিন্তু ইউনেস্কো থেকে প্রকাশিত মুসলিম স্থ্যাপত্যের ক্যাটালগে একে শাহ মোহাম্মদ মসজিদ হিসাবে নির্দেশ করা হয়েছে।
আরও: নিকলী হাওর, মিঠামইন এবং অষ্টগ্রাম
ইতিহাস ও স্থাপত্যশৈলী
১৬৮০ সালের প্রাচীন মোঘল আমলে নির্মিত শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ টি নির্মান করেন বণিক শেখ মাহমুদ এবং তার নামেই মসজিদটির নামকরণ করা হয়েছে। শেখ পড়িবারের উত্তরসূরিরা মসজিদের পাশেই বসবাস করেন।
প্রাচীন এই মসজিটি দেখতে আপনাকে যেতে হবে ঢাকা বিভাগের কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে মঠখোলা-মির্জাপুর-পাকুন্দিয়া সড়কের পাশে এগারসিন্দুর গ্রামে।
মোঘল স্থাপত্যশৈলী মসজিদটি চারদিকে আড়াইফুটি দেয়াল দিয়ে ঘেরা। ১ গম্বুজ বিশিষ্ট বর্গাকৃতি এই মসজিটির প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৩২ ফুট এবং এর ৪ কোণায় আট কোণাকৃতির বুরুজ বা মিনার রয়েছে।
মসজিদের ভিতরে এবং বাইরে রয়েছে পোড়ামাটির চিত্রফলক ও পূর্বের দেয়ালে ৩টি দরজা এবং ছনের কুটীরের ন্যায় অত্যন্ত আকর্ষণীয় একটি পাকা দোচালা ভবন রয়েছে যা বালাখানা নামে পরিচিত।
শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে শেখ সাদি জামে মসজিদ নামে আরেকটি প্রাচীন মসজিদ রয়েছে। এখানে কথিত রয়েছে যে, শাহ্ মাহমুদ ও শেখ সাদি দুইজন ব্যবসায়ী ভাই ছিলেন। শাহ্ মাহমুদ মসজিদ নির্মানের ২০ বছর পূর্বে শেখ সাদি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন।
আরও: বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
কিভাবে যাবেন
আপনি বাংলাদেশের যে কোন স্থান থেকে এখানে ভ্রমণে আসতে পারবেন। আর ঢাকা থেকে ভ্রমণে যেতে চাইলে সড়ক ও রেলপথে কিশোরগঞ্জে যেতে পারবেন।
রাজধানী ঢাকার গুলিস্থান, মহাখালী অথবা গোলাপবাগ থেকে অনন্যা, যাতায়াত নন-এসি বাস পাকুন্দিয়া হয়ে কিশোরগঞ্জ যায়। ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার থানাঘাট মোড় পর্যন্ত অনন্যা ক্ল্যাসিকের ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা নিতে পারে।
পাকুন্দিয়া থানাঘাট মোড় থেকে যেকোন অটোরিক্সাকে বললে আপনাকে শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদে নিয়ে যাবে।
আপনি চাইলে কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে ট্রেনে কিশোরগঞ্জ যেতে পারেন। কমলাপুর থেকে এগারসিন্ধু গোধূলি ও এগারসিন্ধু প্রভাতী এক্সপ্রেস কিশোরগঞ্জ যায়।
কিশোরগঞ্জ পৌঁছে স্থানীয় যে কোন পরিবহণে পাকুন্দিয়া উপজেলা হয়ে এগারসিন্ধুর গ্রামে শেখ মাহমুদ শাহ্ মসজিদে যেতে পারেন।
কোথায় খাবেন
শেখ মাহমুদ শাহ মসজিদ ভ্রমণে গিয়ে খাওয়ার জন্য আপনাকে কিশোরগঞ্জ শহরে যেতে হতে পারে। কারন, মসজিদটি এগারসিন্ধুর গ্রামে অবস্থিত। আপনি চাইলে গ্রামের ছোট দোকান অথবা হোটেল থেকে খেয়ে নিতে পারেন।
আরও: বাংলাদেশের ৬৪ জেলার বিখ্যাত খাবারের তালিকা
কোথায় থাকবেন
যদিও এটি একদিনের ভ্রমণ তারপরও যদি থাকতে চান তাহলে আপনাকে থাকার জন্য কিশোরগঞ্জ শহরে যেতে হবে। কিশোরগঞ্জ শহরে মোটামোটি মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।
আর ভালো মানের হোটেলে থাকতে চাইলে আপনাকে ক্যাসেল সালাম ও উজান ভাটি হোটেলে থাকতে হবে।
ভাড়া: নন-এসি এবং এসি রুমের ভাড়া ৮০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা নিতে পারে।
ফেসবুক: Kuhudak