একদিনে সুনামগঞ্জ ভ্রমণ করে আসলাম। সবচেয়ে কাছের বন্ধু কাঞ্চন মোড়ল সিলেট থেকে পড়াশােনা শেষ করে সুনামগঞ্জ শহরে এখন ওয়ালটন এর বিজনেস করছে। পাশাপাশি শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে প্র্যাক্টিস করছে সুনামগঞ্জ কোর্টে।
তারই আমন্ত্রণে এবার সুনামগঞ্জ ভ্রমণে যাওয়া। এছাড়াও নিজের জেলা শহর হওয়ায় সুনামগঞ্জ এর প্রতি বরাবরই অন্যরকম টান কাজ করে। আমরা দুইবন্ধু অবশ্য প্রায়ই হুটহাট ট্যুর দিয়ে থাকি।
আমাদের একদিনে ভ্রমণ স্থান গুলো: যাদুকাটা নদী, বারেক টিলা, নীলাদ্রি লেক, শিমুল বাগান, লাকমাছড়া ও লালঘাট।
আরও: ভ্রমণ কাহিনী
সুনামগঞ্জ ভ্রমণ, সিলেট
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ভ্রমণ স্পট গুলাের একটি হলাে সিলেট । নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ভরপুর সিলেট বিভাগের আনাচে কানাচে রয়েছে অনেক সুন্দর স্থান। তেমনি ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেষা প্রাকৃতিক সম্পদ আর অপরুপ সৌন্দর্যে প্রকৃতি তার নিজ হাতেই সাজিয়েছেন সিলেট বিভাগের হাওরের রাজধানী শহর সুনামগঞ্জ জেলাকে। এই শহরে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকের সংখ্যা।
বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা এবং তাহিরপুর উপজেলাস্থিত জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ মিঠা পানির এ টাঙ্গুয়া হাওর, যাদুকাটা নদী ও বারেক টিলা ও পাহাড়ের নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঝড়-বৃষ্টি, রোদ উপেক্ষা করে প্রতিদিন দেশ বিদেশের হাজারও পর্যটক ভীড় করছেন এই শহরে। আমিও বন্ধুর আমন্ত্রণ রক্ষার্থে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার বেছে নিলাম ।
আরও: ক্ষণিকের যাত্রা
প্ল্যান অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুর দিকেই ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করলাম, পৌঁছেও গেলাম রাত ১০ টা নাগাদ। ব্যবসায়ী বন্ধুর ওয়ালটন শো-রুম ভিজিট করে তাকে সাথে নিয়ে তার দ্বিচক্রযানে চড়ে চলে গেলাম সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত তার বাসায়। রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে সকালের ভ্রমণ প্ল্যান রেডি করতে করতেই রাত ২ টা বেজে গেলো।
ঘরিতে ভোর ৬ টা বেজে ২০ মিনিট। ঘুম থেকে তড়িঘড়ি করে উঠে ফ্রেস হয়ে নাস্তার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম দুই বন্ধু। সকালের নাস্তা শেষ করে বন্ধুর ৭ টার দিকে বাইকে করে যাত্রা শুরু করলাম। প্রথম গন্তব্য বারেক টিলা ও যাদুকাটা নদী।
বারেক টিলা ও যাদুকাটা নদী
পাহাড়ের গাঁ ঘেসে চলা রাস্তা ধরে অল্প সময়েই পৌঁছে গেলাম প্রথম গন্তব্যে। বারেক টিলা সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে অবস্থিত। এটি বিভিন্ন জনের কাছে বারিক্কা টিলা নামেও পরিচিত। টিলার উপর থেকে মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড় দেখা যায়। বারেকের টিলা থেকে থেকে পাহাড়ের ভিউটা অসাধারণ সুন্দর ।
টিলায় দাড়িয়ে বারবার ইচ্ছা করছিলো মেঘালয়ের পাহাড় গুলো ছুঁয়ে দেখার! সবুজে পরিপূর্ণ টিলার মধ্য দিয়ে টেকেরঘাট যাবার রাস্তা নির্মিত হয়েছে। বারেক টিলার পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ভারতের খাসিয়া পাহাড় থেকে আসা যাদুকাটা নদী। টিলার গা বেয়েই বইছে যাদুকাটা নদী যার পানির রং স্বচ্ছ নীল। ছবির মতন সুন্দর একটা জায়গা।
বর্ষায় যাদুকাটা নদী বেয়ে ভারত হতে বাংলাদেশে প্রচুর বালু ও পাথর আসে। বারেক টিলার উপর থেকে যাদুকাটা নদীর দিকে তাকালে যে নৈস্বর্গিক দৃশ্য চোখে পড়ে তার রেশ যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি নিমিষেই মুছে ফেলার জন্য যথেষ্ট। আমার মতে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ক্যাম্পিং করার জন্য বারিক্কা টিলা হচ্ছে একটি আদর্শ জায়গা। এখান থেকে সুর্যোদয়ের সুন্দর দৃশ্য দেখা যাবে ক্রিস্টাল ক্লিয়ার।
আরও: রাত ২টা ৫২ মিনিট!
লাখমাছড়া ঝর্ণা ও লালঘাট
বারেক টিলা থেকে বাইকে করে প্রায় ২৫ মিনিট পথ পাড়ি দিয়ে পৌঁছে গেলাম বড়ছড়া চারাগাঁও শুল্ক স্থলবন্দর। এখানে কালক্ষেপণ না করে চলে গেলাম লাখমাছড়া ঝর্ণায়। লাখমাছড়া ঝর্ণাটির মেইন পয়েন্ট যাওয়ার অনুমিত না থাকায় হওয়ায় দূর থেকেই পানিতে পা ভিজিয়ে উপভোগ করেছিলাম। তবে অনেকেই গোসল করায় ব্যস্ত সময় পাড় করছিলেন।
আমাদের হাতে সময় কম থাকায়, এখান থেকে সোজা চলে গেলাম লালঘাট যা অনেকে সাতমুখী ঝর্ণা নামেই চিনে থাকবেন। এখানে এখন সাতটার বদলে তিন/চারটি মুখ দিয়ে ঝর্ণার মতো করে ভারত থেকে পাহাড় বেয়ে অল্প পানি আসছে। এখানে বেশী সময় ব্যয় না করে চলে আসলাম নিলাদ্রী লেকে। মাঝখানে সুযোগ মতোন দুপুরের খাবারও খেয়ে নিলাম।
আরও: সুন্দরবনে হারিয়ে যাওয়া ৬ কিশোরের শ্বাসরুদ্ধকর ভ্রমণ কাহিনী
নিলাদ্রী লেক ও শিমুল বাগান
নীলাদ্রি! নামের মত তার সৌন্দর্য্য। নীলাদ্রি লেকের ছোট ছোট টিলা গুলোতে বসে অন্যান্য পর্যটকদের সাথে গল্প-গানে আড্ডা দিয়ে বিকেলটা কাটিয়ে দিলাম। সবচেয়ে সুন্দর প্লেস আমার কাছে এটাই মনে হয়েছে। এখানেই আমরা দুই বন্ধু সবচেয়ে বেশী সময় ব্যয় করি।
নিলাদ্রী লেক শেষ করে বাইকে চড়েই সোজা চলে যাই শিমুল বাগানে। এই সময়ে বাগানের মূল দৃশ্য দেখা যাবে না। শীতের শেষে এই বাগানের আসল রুপ ধারণ করে। এখনও ২০ টাকা করে ফী নিচ্ছে শিমুল বাগানে প্রবেশ করতে, পর্যটকদের ভীড়ও কোন অংশে কম নয়। শিমুল বাগান থেকে বাদাঘাট হয়ে সরাসরি তাহিরপুর সদরে রাত ৮ টায় নৈশভোজ শেষে রাত দশটার আগেই সুনামগঞ্জ শহরে পৌঁছে যাই।
দিনশেষে মনে হলো এই রোড একদিনে ভ্রমণ করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে বাইক দিয়েই সম্পূর্ণ ট্যুর শেষ করতে হবে। আর সাথে সানগ্লাস, ছাতা, পানি ও সুযোগ পেলে ডাবের পানি পান করতে হবে প্রচুর।
ভ্রমণ কাহিনী লিখেছেন: আরিফুল ইসলাম সৌরভ (ঢাকা সেনানিবাস, ঢাকা – ১২০৬)
আরও: ১ কেজি কলা – শেরপুর, বগুড়া
ফেসবুক: Kuhudak
It’s a shame you don’t have a donate button! I’d certainly
donate to this brilliant blog! I suppose for now i’ll settle for
book-marking and adding your RSS feed to my Google account.
I look forward to new updates and will share this blog with
my Facebook group. Talk soon!
A great piece of writing on your home district Sunamganj. Unfortunately I have not yet visited that hopefully will have a visit to Sunamganj and Greater Sylhet immediately. I will also write a brief in the travel blog Vromon Bangla. Thank you, Arif.